ডাক্তার সাবরিনা পেশায় চিকিৎসক হলেও আকর্ষণীয় সাজগোজে ছবি-ভিডিও প্রকাশের কারণে থাকেন আলোচনায়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে গণমাধ্যমে দেশের চলমান ধর্ষণ ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গ্লোবাল স্টার কমিউনিকেশন আয়োজিত ও প্রথমা বাংলাদেশ নিবেদিত ‘গ্লোবাল স্টার উইমেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’-এ অ্যাওয়ার্ড পান ডা. সাবরিনা।
ডা. সাবরিনা বলেন, ‘ধর্ষণ একটি আদিমতম অপরাধ।
নারীদের প্রতি মুহূর্তে প্রতিবন্ধকতা। আমি বলব, শুধু পুরুষদের দায়ী করা ঠিক নয়। নারীর ওপর অত্যাচারের জন্য এই ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এবং সোশ্যাল ভায়োলেন্সের জন্য নারীরাও অনেক সময় দায়ী হয়। নারী জনমের জন্য সুখী নয়, নিরাপদ বোধ করে না।
সে দেশে এ পুরস্কার হাতে নিয়ে ভালো লাগে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা সব সময় নারীদের সঙ্গে কোনো সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট হলে নারীকেই দায়ী করেন। বলেন, নারীর চালচলনে সমস্যা, নারীর পোশাক-আশাকে সমস্যা তারা ৮ বছরের মেয়েটার ক্ষেত্রে কী বলবেন?
আজও কি এই মেয়ের চালচলন, নাকি পোশাক-আশাকের দোহাই দেবেন। কাজেই আমি বলব, যেদিন মা-বাবারা কন্যাসন্তান হওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ মন থেকে বলতে পারবেন সেদিন মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদেরকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতে হবে না।
সেই দিন এই দিবস এই পুরস্কার সার্থক হবে। না হলে এই দিবস এই পুরস্কার কোনোটাতেই সার্থকতা নেই।’
নারীদের প্রতি মুহূর্তে প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স শুধু নয়, সোশ্যাল ভায়োলেন্স হয় এবং অনেক সময় আমি বলব শুধু পুরুষদের দায়ী করা ঠিক নয়। নারীর ওপর অত্যাচারের জন্য এই ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স এবং সোশ্যাল ভায়োলেন্সের জন্য নারীরাও অনেক সময় দায়ী হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখ বোধ করছি তার পরও বলছি এই ধর্ষণ মামলার মতো মামলাটাকে বিভিন্ন কারণে ব্যবহার করে এর গুরুত্বটা এমন কমিয়ে ফেলেছে যার কারণে যারা প্রকৃত ভুক্তভোগী, প্রকৃত ধর্ষিতা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় শরীর এবং মন তারা বিচার পাচ্ছে না।
কাজেই আমি বলব, দয়া করে এই মামলাটিকে প্রহসনের মামলা বানিয়ে না ফেলে এমন একটি অবস্থা তৈরি করুন, যাতে মামলার গুরুত্ব নিশ্চিত হয় এবং এ মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান হয়। এই দাবি আমার মোটেও রাষ্ট্রের কাছে নয়।’
ধর্ষণ একটা আদিমতম অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটার জন্য আইন আছে। কিন্তু আইন করে কি এটা বন্ধ করা গেছে? যায়নি। সবচেয়ে প্রথমে প্রয়োজন পারিবারিক শিক্ষা। ফেসবুক খুললে বিভিন্ন পুরুষের, কোনো কোনো সময় নারীদেরও কিছু কিছু মন্তব্যে বোঝা যায় কী ধরনের মানসিক অবস্থা তারা ধারণ করেন এবং লালন করেন।’
সর্বশেষে এ ইনফ্লুয়েন্সার বলেন, ‘একটা নারীর সঙ্গে একটা খারাপ কিছু হলে তারা দায়ী করার চেষ্টা করেন নারীর চলাফেরা, পোশাক-আশাক, যে কারণে একটা ৮ বছরের শিশুর ওপর এত বড় ধরনের অপরাধ ঘটতে পারে।
তাহলে কি শুধু রাষ্ট্রই দায়ী? না, সব সময় শুধু রাষ্ট্রই দায়ী নয়। প্রয়োজন পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা এবং রাষ্ট্রের তো দায়িত্ব অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, বিচার এবং বিচারের যাতে সুনির্দিষ্ট প্রয়োগ হয় কোনো ফাঁক গলে যেন ধর্ষক পালিয়ে যেতে না পারে।’
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণাকাণ্ডে দেশব্যাপী আলোচিত হন ডাক্তার সাবরিনা। সেই মামলায় কারাগারেও ছিলেন দীর্ঘদিন।