এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার প্রেক্ষাপটে তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার গুঞ্জন জোরালো হয়েছে।
যদিও সম্প্রতি এক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করেছেন, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত তার ‘একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’। রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকে ধারণা করছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণেই তার দেশে ফেরা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে—এই আশঙ্কা ভিত্তিহীন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমান দেশে ফিরলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পাবেন। তার বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকেই বিমানবন্দর থেকে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) তাকে স্কর্ট করতে পারে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা সমমানের ভিভিআইপি ব্যক্তিদের মতোই নিরাপত্তা পেতে পারেন তিনি। একই ধরনের নিরাপত্তা ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকেও দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, তারেক রহমানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। বরং সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী তার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে প্রস্তুত। যদিও বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত তিনি দেশে ফেরার কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নেননি।
খালেদা জিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল টেস্টের রিপোর্টের ওপরও তার সিদ্ধান্ত নির্ভর করতে পারে। রিপোর্ট যদি নেতিবাচক হয় এবং বিদেশে নেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সূত্র বলছে, তিনি ডিসেম্বরের ১১ তারিখের মধ্যেই দেশে ফিরতে পারেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “বেগম জিয়াকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব কি না—তা বিবেচনা করে তারেক রহমান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে আশা করি।”
এদিকে, মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট নবায়ন না করায় দেশে ফিরতে তারেক রহমানকে নতুন পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস নিতে হবে। সরকার জানিয়েছে, তিনি চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি ট্রাভেল পাসের আবেদন করেননি বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমও বলেন, দেশের কারও নিরাপত্তাহীনতার কারণ নেই। প্রয়োজনে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে।
ফলে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে সরকারের এই আশ্বাস।