“পুরোনো মাফিয়া সিস্টেমের সঙ্গে আমরা আর খেলব না”
এমন সোজাসাপ্টা বার্তা দিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিজয়স্তম্ভ চত্বরে বিকেলে অনুষ্ঠিত পথসভায় গর্জে উঠলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। তার ভাষায়, “এই পুরোনো সিস্টেম ভাঙতেই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, আমরা রক্ত দিয়েছি। এখনো যদি খেলার নিয়ম না বদলায়, তাহলে আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিন।”
তিনি বলেন,
“নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে সেই মাফিয়া রাষ্ট্রব্যবস্থার নগ্ন উদাহরণ, যেখানে পরিবারতন্ত্র, গডফাদারতন্ত্র আর দখলদারিত্ব একসঙ্গে মিশে গেছে। বছরের পর বছর কয়েকটি পরিবার এই শহরকে নিজেদের সম্পত্তির মতো শাসন করেছে। ব্যবসা, অর্থনীতি, রাজনীতি—সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে তারা জনগণের অধিকারকে ছিনিয়ে নিয়েছে।”
নাহিদ স্পষ্ট করে বলেন,
“এই সিস্টেমেই চলছে পুরো বাংলাদেশ। মাফিয়া ব্যবসায়ীদের প্রটেকশন দেওয়া হচ্ছে, আর মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের তাড়নায় পিছু হটছে। আমরা এই পুরোনো খেলার অংশ হব না। এই খেলা চলতে পারে না। সময় এসেছে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার।”
তিনি আরও বলেন,
“গণঅভ্যুত্থান কোনো একদিনের উত্তেজনা নয়—এটা একটি নতুন বন্দোবস্তের জন্য ছিল। সেই নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে। নারায়ণগঞ্জে গড়ে তোলা সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য আমরা গুঁড়িয়ে দেব। আমরা হুমকিতে ভয় পাইনি, পাব না।”
এ সময় নাহিদ ইসলাম শহীদ পরিবারগুলোর কথা উল্লেখ করে বলেন,
“জুলাইয়ের শহীদ পরিবারগুলো আজও বিচার চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সরকার ব্যবস্থা দিচ্ছে খুনিদের, আর হুমকি দিচ্ছে যারা প্রতিবাদ করেছে তাদের।”
পথসভায় আরও গর্জে ওঠেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তার কণ্ঠে স্পষ্ট ছিল প্রতিরোধের ঘোষণা:
“সন্ত্রাসী হামলা করে আমাদের থামানো যাবে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ফেরানোর জন্য ভারতীয় শক্তি একযোগে মাঠে নেমেছে। কিন্তু কেয়ামত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে আর কোনো দিন ফিরে আসতে দেব না।”
তিনি আরও বলেন,
“আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একেবারে ভারতীয় একটি প্রক্সি দল। এই দলে ভালো বলতে কিছু নেই। দেশের প্রতি তাদের কোনো দায় নেই, আছে কেবল বিদেশী প্রভুদের প্রতি আনুগত্য।”
নারায়ণগঞ্জে পথসভা শেষে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—গণঅভ্যুত্থান কেবল অতীতের গল্প নয়, এটি চলমান আন্দোলনের ভিত্তি। আর এই আন্দোলনের কেন্দ্রে এখন একটি দাবি—পুরোনো সিস্টেমের বিলুপ্তি এবং জনগণের নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।