বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকার একটি আন্দোলনের ফসল, বিপ্লবের মাধ্যমে এসেছে। কিন্তু বিপ্লবের সরকার হওয়ার পরেও তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে “আমরা বিএনপি পরিবার” আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে আহত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ফটোসাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অনেক কিছু ঘটে গেছে, এই সরকার তো অনেক রক্ত ঝরিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্তের বিনিময়ে এই সরকার এসেছে। কিন্তু যদি এই সরকার ধীরগতিতে চলে, তাহলে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠবে, আর সেই প্রশ্নের জবাব কীভাবে দেবে তারা?”
মুদ্রাস্ফীতি ও বাজার সিন্ডিকেটের ভয়াবহতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সরকার অনেক রক্ত ঝরিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের অবস্থা করুণ। নিম্ন আয়ের মানুষ, রিকশাচালক, সিএনজি চালকদের পর্যন্ত এক কেজি চাল কেনার সামর্থ্য নেই। মুদ্রাস্ফীতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে মানুষ প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য হিমশিম খাচ্ছে। অথচ সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ।”
তিনি আরও বলেন, “দেশি বিস্কুট, মশার কয়েলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করবে? সরকারের প্রধান দায়িত্ব সিন্ডিকেট ধ্বংস করা, কিন্তু সেটাই করা হচ্ছে না। বরং নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে ফেলা হয়েছে।”
সভায় উপস্থিত বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারের প্রতি কঠোর নীতিগত পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান এবং জনগণের দুঃখ-দুর্দশার অবসান ঘটানোর জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের পুরো পোল্ট্রি শিল্প তিন থেকে চারটি কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করে। এই সিন্ডিকেট ভাঙা কি সম্ভব নয়? সরকার তা করছে না কেন? সিন্ডিকেটের কারণেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হুহু করে বাড়ছে।
তিনি বলেন, “বাণিজ্য উপদেষ্টা নিয়োগের পরদিনই সয়াবিন তেলের দাম আট টাকা বেড়ে যায়। এরপর বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যায়, এবং পরে পুনরায় ফিরে আসে উচ্চ দামে বিক্রির জন্য। এই চক্রান্তের পেছনে কারা কাজ করছে?”
রিজভী বলেন, “সরকার যদি শ্লথ গতিতে চলে, তাহলে জনগণের মনে প্রশ্নবোধক চিহ্ন আসবে, যা সরকার ঢাকতে পারবে না। সরকার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?