ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সহিংসতা থেকে ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। যদি সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মতোই ছাত্রসমাজ রাজপথে নেমে ছাত্রলীগকে প্রতিহত করবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, “জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী প্রতিটি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সব কর্মসূচি ও গোপন তৎপরতা প্রতিহত করার দায়িত্ব সরকারের।”
তার এই বক্তব্য ছাত্র রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ছাত্রদল আরও বড় কর্মসূচির দিকে এগোতে পারে। একই সঙ্গে, সরকার যদি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সহিংস কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে পুনরায় রাজপথ উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হল-
জুলাই-আগস্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে দুই হাজারের অধিক মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছে, তাদের সবাইকে পুলিশ বা সরকারি বাহিনী হত্যা করেনি। নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডাররা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে অসংখ্য মানুষ খুন করেছে। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন গণহত্যায় ফ্যাসিস্ট পলাতক খুনি হাসিনার নির্দেশে কসাই-জল্লাদের ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ। গণহত্যার আগেও সারাদেশে বিশ্বজিৎ-আবরার থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ যত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সবগুলো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন মিলেও এত মানুষ খুন করেনি।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রলীগকে নামেমাত্র নিষিদ্ধ করে দায় সেরেছে। ছাত্রলীগের খুনি, সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার কোনো জোরালো তৎপরতা গ্রহণ করেনি। ছাত্রলীগের শীর্ষ কোনো নেতাকে বা সন্ত্রাসী ক্যাডারকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ছাত্রজনতা নিজেরা কয়েকজনকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছে। সরকারের এই ব্যর্থতার কারণেই নিষিদ্ধ খুনি সংগঠন ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করার সাহস পেয়েছে। খুনিদের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের নির্লিপ্ত আচরণের কারণেই তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে।
জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার ওপর আক্রমণকারী প্রতিটি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সব কর্মসূচি এবং গোপন তৎপরতা প্রতিহত করার দায়িত্ব সরকারের। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্র জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে ছাত্রজনতা জুলাই-আগস্টের মতোই আবারও রাজপথে নেমে ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সারাদেশে ছাত্রজনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত। শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম আকরাম, মুগ্ধ, রাব্বি, রিয়া গোপ, রিদয় তারুয়াসহ হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের সফলতা অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আমরা জুলাই-আগস্টের বীর শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ইনশাআল্লাহ।
‘মোদের মৃত্যু লেখে মোদের|| জীবন–ইতিহাস! হাসির দেশে আমরা আনি|| সর্বনাশী চোখের জল আমরা ছাত্রদল’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?