আগামী রোববার দুই দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। ইসহাক দারের সফরকালে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব বিষয় চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘কয়টি চুক্তি সই হবে- তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে একাধিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।’ এই সফরকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যা বিগত ১৩ বছরের মধ্যে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের সম্পর্কের অচলাবস্থা নিরসনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার জন্য এই সফরকে কূটনীতিকরা একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের সফর হওয়া অপরিহার্য।’
তিনি আরও বলেন, পুনরায় একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্যকরী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকা এবং ইসলামাবাদ উভয়ই এখন গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে।ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ শাসনামলে দক্ষিণ এশীয় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তীব্র অবনতি ঘটেছিল।
এ সময় উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনমন হয়েছিল এবং এক দেশ অপর দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা দেওয়া উল্লেখযোগ্য হারে সীমিত করেছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং উভয় দেশের মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি, গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত।
স্বাধীনতা-পূর্ব সম্পদের বিভাজন থেকে উদ্ভূত আর্থিক পাওনা নিষ্পত্তিসহ দীর্ঘকাল ধরে বেশ কয়েকটি অমীমাংসিত ঐতিহাসিক ইস্যুগুলোর সমাধান ইসলামাবাদ করবে- এমনটাই আশা করে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ‘ভাগ করা সম্পদের কোন অংশ কে পাবে সেটি সমাধান করা দরকার।’ সফরসূচি অনুযায়ী, ইসহাক দার রোববার বিকালে একটি বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছবেন এবং সোমবার সন্ধ্যায় দেশের পথে রওনা হবেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং দার সোমবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ‘তিনি (দার) বিকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে।
গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি অনুষ্ঠানে এই সফরের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়। এই এফওসি ছিল ১৫ বছরের মধ্যে দুটি দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠক।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?