গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নির্বিচারে গুলি চালানোয় শতাধিক প্রাণহানি ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এ ঘটনায় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। বিশেষ করে, অভিযোগ রয়েছে যে মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে প্রমাণ ধ্বংসের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে তদন্তকারী দল ডিজিটাল ফোরেনসিকের মাধ্যমে কিছু ডেটা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে, যা আদালতে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, হেগভিত্তিক আইসিসিতে এই মামলা পাঠানোর বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, “এটি বাংলাদেশের জন্য একটি জটিল সিদ্ধান্ত। আমরা প্রোস ও কনস বিশ্লেষণ করছি। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারবে বাংলাদেশে কী ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা চায় ন্যায়বিচার দৃশ্যমান হোক।” তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
আইসিসির প্রসিকিউশন টিম ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করছে।বেসরকারি এক টিভি চ্যানেলকে পাঠানো এক ইমেইলে তারা জানায়, বাংলাদেশ চাইলে মামলা প্রস্তুতিতে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। আইসিসির এ উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক চাপের অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত বিচার চাইলেও, রাজনৈতিক সংকট ও অভ্যন্তরীণ আইনি জটিলতা এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সরকারের কিছু মহল আইসিসিতে মামলা পাঠানোকে “সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন” হিসেবে দেখছেন। তবে ভুক্তভোগী পরিবার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে আদালতে প্রেরণের সম্ভাবনা এখনো উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?