বাংলাদেশ যেকোনো ধরনের অপরাধ, বিশেষত গুম, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার সক্ষমতা রাখে এবং এই বিচার সম্পূর্ণরূপে দেশের নিজস্ব আইনি কাঠামো এবং ডমেস্টিক ট্রাইব্যুনালের অধীনে পরিচালিত হবে—এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শনিবার জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের আওতায় গঠিত ট্রাইব্যুনালেই এই অপরাধগুলোর বিচার হবে। আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থা এই বিচার পরিচালনার জন্য যথেষ্ট পরিপক্ব ও সক্ষম।”
জাতিসংঘের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাজুল ইসলাম বলেন, “জাতিসংঘ এরই মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে নিজেদের মত অনুসন্ধান চালিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।”
তিনি আরও জানান, “জাতিসংঘ আমাদের ইনভেস্টিগেটর এবং প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও সহায়তা করছে। এই ধরণের কারিগরি সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।”
দেশের বাইরে বিচার করার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা মনে করি, এ ধরনের আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়া একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। বাংলাদেশে যেখানে অভ্যন্তরীণ বিচার সম্পূর্ণরূপে সম্ভব, সেখানে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। দেশের আইনি কাঠামো যথেষ্ট শক্তিশালী এবং জাতির স্বার্থেই আমাদের বিচার নিজ দেশে হওয়া উচিত।”
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিষয়ে তাজুল ইসলাম জানান, “যারা এই অপরাধে সম্পৃক্ত এবং যাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তারা আমাদের কাছে অভিযুক্ত আসামি। এদের গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছি। তার পাশাপাশি যারা বিদেশে পালিয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে, তাদের বিষয়েও পর্যায়ক্রমে তথ্য ও নথি ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হচ্ছে যেন তাদের গ্রেপ্তার করে দেশের আইনের আওতায় আনা যায়।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ বক্তব্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উপর সরকারের আস্থা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পূর্ণ নিজস্ব কাঠামোর মধ্যেই পরিচালনার সংকল্প স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের কারিগরি সহযোগিতাও বিচার ব্যবস্থার আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?