ভিয়েতনাম থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা ২৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি ওবিই ডিনারেস নামের জাহাজটি আজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত জি টু জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) চুক্তির আওতায় এই চালানটি এসেছে, যা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সরকারি তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছে, ভিয়েতনামের সাথে সম্পাদিত এই জি টু জি চুক্তির আওতায় মোট এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে দুটি চালানে মোট ৩০ হাজার ৩শ’ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে পৌঁছেছে। আজকের চালানটি তৃতীয় চালান হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে এবং এটি দেশের খাদ্য মজুত বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্রুত চাল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই চাল খালাসের কাজ শুরু হবে এবং তা দেশের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে বিতরণ করা হবে।
বিশ্ববাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম অস্থিতিশীল থাকা এবং স্থানীয়ভাবে চাল উৎপাদনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশ সরকার এই ধরনের আমদানির ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। বিশেষ করে দেশের অভ্যন্তরে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা থাকলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চালের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটলে এই ধরনের আমদানি ব্যবস্থা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চুক্তির আওতায় বাকি চালের চালানগুলো যথাসময়ে বাংলাদেশে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরও সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহিত করতে কার্যকরী নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়েও আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভিয়েতনামের সাথে সম্পাদিত এই চুক্তি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে তারা সতর্ক করেছেন যে, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি ছাড়া কেবলমাত্র আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা দীর্ঘমেয়াদে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। একইসঙ্গে তারা স্থানীয় কৃষকদের জন্য সহায়ক নীতিমালা ও প্রণোদনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা চালের পরিমাণ দেশের খাদ্য মজুত বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আশার আলো দেখালেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামগ্রিকভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?