জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন, যা বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেল ৫টায় এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে (ইকে-৫৮৬) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরসূচি তুলে ধরে উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, আন্তোনিও গুতেরেস ১৬ মার্চ বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। এই চার দিনের সফরে মূলত শুক্রবার ও শনিবার তার গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। সফরের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা রোহিঙ্গা সংকট পর্যালোচনা, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন কার্যক্রম মূল্যায়ন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি সরাসরি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাবেন। একই দিন প্রধান উপদেষ্টাও কক্সবাজার সফর করবেন, তবে তার জন্য পৃথক কর্মসূচি নির্ধারিত রয়েছে।
সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা। এই ইফতার আয়োজনটি সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে সম্পন্ন হবে, যা বৈশ্বিক পর্যায়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরবে।
শনিবার (১৫ মার্চ) জাতিসংঘ মহাসচিব সকালেই জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। পরে তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই দিন তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
সেদিনই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এখানে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা, কূটনীতিক এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সফরের শেষ দিন, রবিবার (১৬ মার্চ) তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি তার দ্বিতীয় সফর, যেখানে তিনি রোহিঙ্গা সংকট ও বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। সরকার আশা করছে, তার সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও আলোচনায় আসবে এবং এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন করে উদ্যোগ নেবে। বিশেষ করে জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও বিবৃতিগুলো আন্তর্জাতিক পরিসরে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এবং বাংলাদেশের ওপর চাপ কমানোর বিষয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?