সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির প্রেক্ষিতে মধ্যরাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এই ব্রিফিংটি রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলবে। এটি অনুষ্ঠিত হবে তার নিজ বাসভবন বারিধারার ডিওএইচএস এলাকায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে রাত ২টার দিকে এক খুদে বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে ছিনতাই, সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে বিক্ষোভ করেছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছে। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যেও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মধ্যরাতের ব্রিফিং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রিফিংয়ে তিনি সাম্প্রতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া নতুন পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক সপ্তাহে ছিনতাইকারীদের হামলায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ চক্রের দৌরাত্ম্য বেড়েছে, এবং কিছু এলাকায় মাদক কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য এবং নারীদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং তা মোকাবিলায় কী ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করতে পারেন। এছাড়া, সরকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। তারা সরকারের নেওয়া উদ্যোগের ব্যাখ্যা দিতে পারেন এবং জনগণের আতঙ্ক দূর করার লক্ষ্যে আশ্বাস প্রদান করতে পারেন।
এই জরুরি ব্রিফিং নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলো দাবি করছে, বর্তমান সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কিছু দুষ্কৃতকারী এবং স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কী বার্তা দেবেন এবং সরকার কী ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তা জানতে দেশবাসীসহ গণমাধ্যমের নজর এখন বারিধারার ডিওএইচএসের দিকে।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?