চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌকা ও কিরনগঞ্জ সীমান্তে শান্তি ও স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি একটি জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করেছে। স্থানীয় জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এই সভাটি রূপ নেয় এক বৃহৎ জনসভায়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা বিওপির আওতাধীন বাখোরআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সীমান্তে চোরাচালান রোধ এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব পায়। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা সীমান্ত অঞ্চলে ভারতের আগ্রাসনের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং সীমান্ত এলাকার মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।
বিজিবি কর্মকর্তারা বলেন, “সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং চোরাচালান বন্ধে জনসাধারণের সহযোগিতা অপরিহার্য। সীমান্তে যে কোনো ধরনের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়াতে স্থানীয়দের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।”
এ ধরনের সচেতনতামূলক উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সভায় ৫৯ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফকে মোকাবিলা করার জন্য বিজিবিই যথেষ্ট। আগে আমরা প্রতিরোধ করব, প্রয়োজনে ১৮ কোটি মানুষ যুদ্ধ করবে। কিন্তু জীবন দিয়ে হলেও আমরা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। তাই অযথা সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডের গিয়ে ভিড় করবেন না।’
বিজিবি অধিনায়ক গোলাম কিবরিয়া আরও বলেন, ‘সীমান্তবাসী মাদক ও চোরাচালান মুক্ত সমাজ গঠনে বিজিবিকে সহায়তা করে আরামে ঘুমাতে পারবেন। আমরা তাদের ধরে পুলিশকে দিয়ে শায়েস্তা করব এবং সীমান্ত সুরক্ষিত রাখব। বিজিবি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। পাঁচশ বা এক হাজার টাকার জন্য কেউ সীমান্তে যাবেন না।’
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজহার আলী, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া, ৫৯ বিজিবির সহকারী পরিচালক মো বেলাল, শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক, সোনামসজিদ বিওপির কোম্পানি কমান্ডার শাহজাহানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবি, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারী চৌকা সীমান্তে অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গেল শনিবার সকালে আবারও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফের সহায়তায় ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশের কৃষকদের আম গাছ ও ফসল কেটে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে বাংলাদেমিদের ওপর হামলা চালায় ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্যরা।