প্রিয় সম্পর্কের বাঁধন শত্রুতে পরিণত হওয়ার অন্যতম কারণ হল ভাষার অপব্যবহার। কথাবার্তা ও ভাব বিনিময়ের সময় সামান্য ব্যতিক্রম কথাও কখনো কখনো সম্পর্কের দৃঢ় বন্ধনকে তছনছ করে দিতে পারে। ইসলাম একজন মুমিনকে অপর মুমিনের সাথে সুন্দর ও উত্তম ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে, কারণ অপর মুমিনের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করা তার হক। মন্দ বা অশালীন ভাষায় কথাবার্তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, কারণ এর মাধ্যমে সীমা লংঘিত হয় এবং তা নাজায়েয।
অনেক সময় কুরআন ও হাদিসের বিরোধী ভাষায় কথাবার্তা হয়। একে অপরের দোষ তুলে ধরে, বাবা-মা সম্পর্কিত অশালীন কথাও বলা হয়, এমনকি মারাত্মক কলহ সৃষ্টি হয়। অশালীন কথাবার্তা মানুষের মনে জেদ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়, যা কখনো কখনো রক্তপাতের কারণ হয়। এই ধরনের ভাষার ব্যবহার সমাজে পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধনকে তিক্ত করে তোলে, অহংকারের বীজ সৃষ্টি করে, এবং নম্রতা ও ভদ্রতার সীমা লংঘিত হয়।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে সুন্দর ও উত্তম ভাষায় কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। সুরা বাকারার ৮৩- , আয়াতে বলা হয়েছে , তোমরা মানুষের সঙ্গে উত্তম ও সুন্দর কথা বলো। অর্থাৎ, মানুষের সাথে কথা বলার সময় ভালো ও সুন্দর ভাষা ব্যবহার করতে হবে এবং খারাপ বা মন্দ কথা বলার প্রচেষ্টা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
বিশ্বনবী সা. তার চিরাচরিত ভূষণ হিসেবে মুখে মুচকি হাসি রেখে কথাবার্তা বলতেন। তিনি বলেছেন, كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ وَإِنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ وَإِنَّ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ প্রত্যেকটি ভালো কাজ সদকা। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো, অন্য ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ১৯৭০)।
তাই পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে সদা হাসিতেই সাক্ষাৎ করা উত্তম। হাসিমুখে কথা বলা ও বিনয়ী আচরণ ইসলামেরও সৌন্দর্য।রসুল সা. আরও বলেন, যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে খুশি করতে এমনভাবে সাক্ষাৎ করেন, যেমন সে নিজে তার জন্য পছন্দ করে, কেয়ামতের দিনে আল্লাহ তাআলা তাকে খুশি করবেন। (তাবারানি, হাদিস: ১১৭৮)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে ভাষার সঠিক ব্যবহার ও ভাব বিনিময়ের সময় রসুল সা. এর এই মহান আদর্শকে জীবনে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।