থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমসটেকের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং স্বাগতিক দেশ থাইল্যান্ড।
বিশ্বমঞ্চে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজনের জন্য ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্মেলনে ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।
হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্যমতে, ভারতের তিনটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে যে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রগুলো উল্লেখ করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একাধিক সদস্য প্রতিনিয়ত ভারতের নীতির সমালোচনা করে আসছে। এর ফলে, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ব্যাপক অবনতি ঘটেছে এবং এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করতে রাজি নন।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি বৈঠকটি হতো, তাহলে ড. ইউনূস শেখ হাসিনা ইস্যু সহ বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করতে পারতেন। কিন্তু মোদি সরকার এমন আলোচনার সম্ভাবনাকে এড়িয়ে যেতে চায় বলে মনে করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
একটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে, “সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা একাধিকবার একে অপরের সম্মুখীন হবেন। হয়তো ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আনুষ্ঠানিকতার বাইরে অল্প সময়ের জন্য কথাবার্তা হতে পারে। কিন্তু তা ছাড়া আর কোনো ফলপ্রসূ বৈঠক হওয়ার আশা করা হচ্ছে না।”
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের তিক্ততার পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তোলার অভিযোগে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। দিল্লি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এই অনিশ্চয়তা এবং প্রতিক্রিয়াহীনতার কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিমসটেকের এই সম্মেলন দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হতে পারত। কিন্তু বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?