আশরাফুল ইসলাম,শেকৃবি প্রতিনিধি
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতির (শেকৃবিসাস) আয়োজনে এক ইফতার মাহফিলে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হলো সবাই। এক ছাদের নিচে একত্রিত হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। ভিন্ন মতাদর্শের ছাত্র সংগঠনগুলো ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা একত্রে বসে ইফতার করেছেন, যা ক্যাম্পাসের সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।
২১ মার্চ (শুক্রবার) বিকাল ৫টায় শেকৃবির এম মাহবুবুজ্জামান ভবনের দ্বিতীয় তলায় এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট ফ্যাকাল্টির সেমিনার কক্ষে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। শেকৃবিসাসের বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের পাশাপাশি প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি উপাচার্য ড. মোঃ আব্দুল লতিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য ড. মোঃ বেলাল হোসেন। এছাড়া ট্রেজারার মোঃ আবুল বাশার, প্রক্টর ড. মোঃ আরফান আলী, ছাত্রদলের সভাপতি আহম্মেদুল কবির তাপস, সেক্রেটারি বিএম আলমগীর কবির, ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবুল হাসান, সেক্রেটারি মেহেদী হাসান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আসাদুল্লাহ নাইম, সদস্য সচিব আল-রাকিব এবং শেকৃবিসাসের বর্তমান ও সাবেক সহযোগী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য ড. মোঃ আব্দুল লতিফ তার বক্তব্যে বলেন,
“সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তারা আমাদের ভালো-মন্দ নিয়ে লিখে, যা আমাদের ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে এবং খারাপ কাজের বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করে। আপনারা যদি আমাদের কোনো ভুলভ্রান্তি দেখেন, তাহলে সরাসরি জানান, আমরা তা সংশোধন করব।”
উপ-উপাচার্য ড. মোঃ বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন,
“জুলাই আন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তাদের স্বচ্ছতার কারণেই ফ্যাসিবাদী শক্তি টিকতে পারেনি।”
শেকৃবিসাস সভাপতি সিরাজুদ্দোলা আরাফাত বলেন,
“তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অতীতে শেকৃবি সাংবাদিক সমিতির অনেক সদস্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, বর্তমান প্রশাসন সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে।”
উপস্থিত প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শেকৃবিসাসের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন দোষ-গুণ তুলে ধরে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করে। একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে সাংবাদিকদের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন।
এই ইফতার মাহফিল ক্যাম্পাসে মতাদর্শগত ভিন্নতার ঊর্ধ্বে উঠে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরির এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।