সিলেট শহরের বাটার আউটলেটে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে অন্যতম এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া যুবকের নাম ইশতিয়াক নূর চৌধুরী জিহান। তিনি সিলেটের সুবিদবাজার এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান চৌধুরীর পুত্র।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) আওতাধীন বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার (৭ এপ্রিল) গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সারা দেশে আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ঘিরে সিলেট শহরের দরগাহ গেইট এলাকায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আড়ালে কিছু দুর্বৃত্ত বাটার একটি আউটলেটে হামলা চালায়। সংঘবদ্ধভাবে দোকানে ভাঙচুরের পাশাপাশি চালানো হয় জুতা লুটপাট।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি দোকানের কাচ ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এর মধ্যে একজন যুবক ব্যাগে ভরে জুতা সংগ্রহ করছেন। পরে পুলিশ নিশ্চিত করে যে ওই ব্যক্তি হচ্ছেন ইশতিয়াক নূর চৌধুরী জিহান।
ওসি জিয়াউল হক বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং নির্ভরযোগ্য সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হই যে লুটপাটকারী যুবক জিহানই। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি সে বিমানবন্দর এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে। অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।”
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেফতার হওয়া জিহান স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় এবং তার বাবা মনিরুজ্জামান চৌধুরী একজন আওয়ামী লীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে এর আগেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা সংক্রান্ত মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বাটার আউটলেটে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাটি সিলেটে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। শহরের কেন্দ্রস্থলে এমন ঘটনায় ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নগরবাসীর অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাব যেই রাখুক না কেন, এ ধরনের অপরাধে দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা উচিত। অন্যথায় ভবিষ্যতে প্রতিবাদ কর্মসূচিকে আড়াল করে সহিংসতা ও দাঙ্গা আরও বাড়তে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার জিহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং দ্রুতই আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। পুলিশ আশা করছে, তার কাছ থেকে আরও তথ্য উঠে আসবে যা অন্য আসামিদের গ্রেফতারে সহায়তা করবে।
এই ঘটনায় সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা অপরাধীদের শাস্তির ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন কোনো প্রকার ছাড় না দেয়। আইন সবার জন্য সমান—এটাই হতে হবে রাষ্ট্রের অবস্থান।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?