রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে ওই কিশোরকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয়, এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
খিলক্ষেত থানার ওসি কামাল হোসেন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মধ্যপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের লক্ষ্য ছিল অভিযুক্তকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া। হামলায় খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশিকুর রহমান আশিকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ঘটনার বিষয়ে খিলক্ষেত থানার ডিউটি অফিসার এএসআই ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়েছিলাম, মধ্যপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা মারধর করছে। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি পরিস্থিতি ভয়াবহ। অভিযুক্তকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ জনতা আমাদের গাড়ির ওপর হামলা চালায় এবং তাকে আমাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়।’’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় পুলিশ সদস্যরা বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও উত্তেজিত লোকজন পুলিশের গাড়ি ঘিরে ধরে এবং ব্যাপক ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে পুলিশকে পিছু হটতে বাধ্য করে। পরে অভিযুক্ত কিশোরকে গণপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। তবে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উত্তেজিত জনতা অন্তত ৭ থেকে ৮ জন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার মামলা দায়ের করেছে এবং শিশুটির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্তমানে পুরো মধ্যপাড়া এলাকা থমথমে এবং সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট, ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের জন্য জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে যথাযথ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?