সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
গত ৭২ ঘণ্টায় লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধর্ষণের ৪টি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
শিশু ও প্রতিবন্ধী নারীদের লক্ষ্য করে সংঘটিত এসব অপরাধে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন উঠেছে।
১৬ মার্চ বিকেলে ৫ বছরের শিশুকে চাচার ধর্ষণ
রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি গ্রামে ৫ বছরের এক শিশুকে তার চাচা রবিউল ইসলাম (১৫) ধর্ষণ করে।
শিশুটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুন নবী জানান, অভিযুক্ত রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সে অপরাধ স্বীকার করেছে।
১৬ মার্চ সকালে ৮ বছরের শিশু ধর্ষণ
একই দিন রোববার (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭ টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কাশিনাথ ঝাড় গ্রামে ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. মেহের আলী (৫৫) আটক হন।
থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ও অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনা হবে।
১৫ মার্চ বিকেলে প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণ
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে আদিতমারী উপজেলার সরলখাঁ গ্রামে এক বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন শাহীন ইসলাম (২৮)।
নারীর ভাই ঘটনাস্থলে এলে শাহীনকে আটক করে এলাকাবাসী। আদিতমারী থানার ওসি আলী আকবর নিশ্চিত করেছেন, অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় হাতীবান্ধার দোয়ানী পিত্তিফাটা এলাকায় ৭ বছরের এক শিশুকে ভুট্টা ক্ষেতে টেনে নেওয়ার সময় স্থানীয়রা জহুরুল মোল্লা সাগর (২১)কে আটক করে।
পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুন নবী বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়ের করা হবে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, “ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর তদন্ত ত্বরান্বিত করা হয়েছে।” তিনি শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা জোরদারে কমিউনিটিভিত্তিক সচেতনতা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। তারা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন ও নারী-শিশু সুরক্ষা আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি জানিয়েছে।
জেলায় ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি ও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের গতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ থাকলেও পুলিশ দাবি করছে, প্রতিটি ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি আইনের শাসনই পারে এমন নিষ্ঠুরতা রোধ করতে।