মোঃ হাসনাইন আহমেদ, ভোলা
ভোলার চরফ্যাশন খাসমহল জামে মসজিদের ৩য় তলায় ১০ বছরের এক মাদরাসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে অজ্ঞাত এক যুবকের বিরুদ্ধে। বলাৎকারের শিকার শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) তারাবি নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নে এবং চরফ্যাশন উপজেলা শহরের একটি মাদরাসার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে খাসমহল মসজিদের ৩য় তলায় মসজিদের সিঁড়িতে শিশুটি নগ্ন ও গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিল। এমন সময় মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করতে আসা এক প্রতিবেশীর নজরে পড়লে তিনি শিশুটির বাবা-মাকে খবর দেন। পড়ে তারা শিশুটিকে প্রথমে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসার জন্য নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। শনিবার (১৫ মার্চ) ভোরে শিশুটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, শুক্রবার তারাবির নামাজের সময় (৭.২৩ মি) মধ্য বয়সী এক ব্যক্তি ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে নিয়ে চরফ্যাশন খাস মহল জামে মসজিদের সামনে ঘুরা ফেরা করছে। ৭ টা ২৯ মিনিটের সময় শিশুটিসহ পাঞ্জাবি টুপিপড়া ওই মুসল্লি মসজিদের ভিতরে ঢুকছেন। এর পরই শিশুটিকে মসজিদের তিন তলায় নিয়ে যায়। রাত ৮টা ২৮ মিনিটের সময় শিশুকে পাঞ্জাবি টুপি খোলা অবস্থায় মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়। পিছন দিয়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে মোটর সাইকেলে দ্রুত সটকে পড়েন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
শিশুটির মা জানান, ছেলের পড়াশোনার সুবাধে আমরা চরফ্যাশন পৌরসভা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতার শেষে তারাবি নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে নামাজ শেষে বাসায় ফেরেন। ছেলে নির্যাতনের খবর পেয়ে খাসমহল মসজিদে গিয়ে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করি। ওর জ্ঞান ফেরার পর বলে যে আমি আমার খালাতো ভাইকে মসজিদে খুঁজতে যাই, তাকে না পেয়ে মসজিদের পাশে দাঁড়ালে এমন সময় একজন লোক একটি মোটরসাইকেল নিয়ে আমার চারপাশে ঘুরতে থাকে এবং একপর্যায়ে আমাকে ঘুরাবে বলে জোরপূর্বক মোটরসাইকেল ওঠায় এবং সামনে বসায়। পরে খাসমহল মসজিদের ৩ তলায় নিয়ে জোর করে প্রথমে আমার গায়ের পাঞ্জাবি খুলে আমার মুখে বাঁধে এবং পায়জামা খুলে আমার হাত বাঁধে। পরে আমাকে নগ্ন করে আমার সাথে তিনি খারাপ কাজ করে চলে যান। আমার ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তার গোপন অঙ্গে ব্যথা রয়েছে।
শিশুটির বাবা জানান, এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। আমার ছেলের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই। যাতে অন্যকারও সন্তান এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
চরফ্যাশন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, ঘটনাটি শুনেছি, আমরা তদন্ত করছি অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।