মো:ফারুক আহমেদ, ঘাটাইল(টাঙ্গাইল)
জীবন যুদ্ধে হার না মানা ব্যক্তি যিনি পঙ্গু হয়েও নিজেকে দার করাননি করুনার দয়া করুক কেউ । তাইতো সমাজ কে দেখিয়ে দিয়েছে চোখে আঙ্গুল দিয়ে অধ্যম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে কোথাযও হোচট খেতে হবে না ।
তাঁদেরই একজন হতভাগ্য আবুল কালাম । কালু নামে যিনি সকলের কাছে অত্যন্ত সুপরিচিত । মৃত জোয়াহের আলী ছেলে।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘল কান্দি ইউনিয়নে বীরচারি গ্রামের উত্তর পাড়ায় তাঁর বসবাস । তাঁর নিজের কোন ঘর নেই ; ছোট ভাইয়ের অনুকম্পায় তাঁরই ঘরের বারান্দার এক কোণায় ছোট্ট কুঠুরিতে এক মাত্র মেয়ে আছিয়া কে নিয়ে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ।
ষাটোর্ধ বয়সী কালু বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করলেও ; জন্মগতভাবে পঙ্গু ছিলেন না । তিনি দিনমজুরী করে স্ত্রী-কন্যা নিয়ে মোটামুটি ভালোভাবেই দিনাতিপাত করছিলেন ।
ভাগ্যদোষে ১৫/১৬ বছর আগে স্ট্রোক করার পর তাঁর বাম হাত এবং বাম পা অবশ হয়ে পড়ে । ফলে ধস নেমে আসে তাঁদের সংসারে । এই চরম দুর্দিনে তাঁর স্ত্রী সুদিনের আশায় পঙ্গু স্বামী এবং শিশু সন্তান ফেলে, অন্যত্র বিয়ে কর কালুকে ছেরে যায।
গর্ভধারিণী মা তাঁর শিশু কন্যাকে রেখে চলে গেলেও, জন্মদাতা পিতা ( কালু ) মেয়েকে পরম স্নেহে বুকে তুলে নিলেন । কন্যার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে লাগলেন । কাজের জন্য ছোটাছুটি শুরু করলেন । মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেন – একটু কাজের জন্য । কিন্তু পঙ্গু বলে কেউ তাঁকে কাজ
দিলনা । উপায়ন্তর না দেখে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও, শুধুমাত্র জীবন-জীবিকার তাগিদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খড়ি চেগানি(কেটে) ( কুড়াল দিয়ে গাছের গুঁড়ি কেটে লাকড়ি বানানো ) এর কাজ শুরু করলেন ; যা অধ্যাবধি চলমান রয়েছে।
তাঁর মেয়েটা বর্তমানে দশম শ্রেণীতে পড়ছে ।জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে কালুর অন্তিম ইচ্ছে – নিজের ছোট্ট একটা ঘর এবং একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেয়া ।
আমরা সভ্য সমাজের লোকেরা কি পারিনা কালুর সামান্য ইচ্ছেটা পূরণ করতে ? তাঁর চিন্তাক্লিষ্ট মুখে একটু হাসি ফোটাতে? অবশ্যই পারি – যদি আমাদের সদিচ্ছা থাকে । তাই এলাকার বিত্তবানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান – আমরা যেন কালুকে ভুলে না যাই, সবাই মানবিক দৃষ্টি মেলে কালুর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াই ।
কালু মিয়ার পুনর্বাসনের বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হান্নান সরকার মুঠো ফোনে জানান যদি সে শারীরিক ভাবে সম্যা হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য আমারা প্রয়োজনীয় গ্রহস করবো ।
উপজেলায় নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)আবু সাইদ মুঠো ফোনে দৈনিক যায়যায়দিন কে জানান কালু পুনর্বাসন করা যাবে। আগে দেখতে হবে কোন ধরনের কাজ সে পারবে।সেটার উপর ভিত্তি করে তাকে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা হবে।