শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
উত্তরাঞ্চলের গেটওয়ে খ্যাত বগুড়ার শেরপুর শহর হলো একটি ব্যস্ততম শহর। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক ৪ লেনে উত্তীর্ন হওয়ায় এ শহর দুভাগে বিভক্ত হয়েছে। ব্যবসা বানিজ্যও দুভাগে বিভক্ত হয়েছে। তাই এই উপজেলার জনসাধারণের প্রাণের দাবি ছিল যানজট নিরসনে শহরের ধুনটমোড় থেকে হাজিপুর পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার রোড নির্মাণের। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ফ্লাইওভার রোড নির্মাণের পরিবর্তে ফুট-ওভারব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইতমধ্যে নির্মাণ হয়েছে একটি ফুট-ওভারব্রিজ। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, শহরের প্রধান সড়কে প্রতিদিন প্রচুর যানবাহন চলাচল করে এবং ব্যস্ত সময়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও সাধারণ পথচারীদের জন্য রাস্তা পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
তারা মনে করেন, শুধুমাত্র ফুট-ওভারব্রিজ নির্মাণ করলে এই সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে না।
এদিকে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৫ ও ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও সাসেক প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক ড. এমডি ওয়াজিউর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সাসেক প্রকল্পের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ফ্লাইওভার না থাকলে যানজটের ভোগান্তি কমবে না। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান। অপর এক বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, আমাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এলাকাবাসীরা জানান, শুধুমাত্র ফুট-ওভারব্রিজ দিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য পুনরায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি নইলে বড় পরিসরে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিবো। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন শেরপুর বাসিরা।
এ বিষয়ে সাসেক প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, শেরপুর শহরের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ফ্লাইওভার রোড নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান জানান, আমরা জনগণের দাবির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি। ফ্লাইওভার নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে আপাতত সকল জনসাধারণ যেন ফুট-ওভারব্রিজ ব্যবহার করে এজন্য সকলকে আহবান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য গত ১ ফেব্রুয়ারী শেরপুর শহরের ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ধুনটমোড় বাসস্ট্যান্ড থেকে হাজীপুর পর্যন্ত (দুই কিলোমিটার) ফ্লাইওভার রোড নির্মাণের দাবিতে বগুড়া-৫ ও ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজের নের্তৃত্বে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ‘গণস্বাক্ষর সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক খানের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।