সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুন-নবীর বিরুদ্ধে “মামলা বাণিজ্য” ও নিরীহ মানুষকে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের মাধ্যমে এই দাবি জানান দলটির নেতা-কর্মীরা। হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষক দলের আয়োজনে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের নেতৃত্ব।
গত ১৮ জুলাই হাতীবান্ধা কৃষি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের মিছিল চলাকালে সাংবাদিক আব্দুর রহিমের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৭ মাস ১৭ দিন পর (৩ মার্চ) থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, এই মামলায় বিএনপি সমর্থকসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ ও ২০-২৫ অজ্ঞাত আসামি করা হলেও থানা ওসি মাহমুদুন-নবী তদন্ত ছাড়াই তা নথিভুক্ত করেন।
এতে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি মমিনুর ইসলাম মমিন ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি সাহিনুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আসামি বানানো হয়।
বক্তারা দাবি করেন, “চাহিদামতো টাকা না পেয়ে” ওসি ও বাদির যোগসাজশে নিরীহ মানুষকে ফাঁসানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি কল রেকর্ডে মামলা বাণিজ্যের কথোপকথন প্রমাণিত বলে তারা উল্লেখ করেন।
মানববন্ধনে হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরন্নবী খন্দকার কাজলসহ নেতারা বলেন, “ওসির অপপ্রচারে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাঁকে প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।” উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আমিনুর রহমানও একই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে ওসি মাহমুদুন-নবী সংবাদমাধ্যমকে জানান, “বিএনপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আইনানুগভাবে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে সাংবাদিক রহিমের ওপর হামলার পর থেকেই এলাকায় উত্তাপ ছিল। তবে মামলায় বিএনপি নেতাদের নাম যুক্ত হওয়ায় রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র হয়েছে।
ভাইরাল রেকর্ড ও তড়িঘড়ি মামলা নথিভুক্তির ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আল্টিমেটামের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন স্থানীয়দের প্রধান উদ্বেগ।