নাজমুল হক চৌধুরী, নরসিংদী প্রতিনিধি:
২০ ঘন্টা পর নরসিংদীতে ফিলিং স্টেশনের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে ফিলিং স্টেশনের মালিকরা। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১টায় নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান এর আশ্বাসের ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় ফিলিং স্টেশন মালিক সমিতি।
মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান এর সাথে মিটিং এ বসে জেলার সিএনজি পাম্প মালিক সমিতি। এসময় তারা নিরাপত্তা শঙ্কার কারণ স্টেশন বন্ধ রাখে বলে জানায়।
পরে প্রশাসন দায়ীদের আইনের আওতায় আনার ও নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর ১ টা থেকে সিএনজি পাম্পগুলো চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বাগহাটায় “সোনারগাঁও ফিলিং স্টেশন ” নামে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ভাংচুর এবং এক কর্মচারীকে মারধর ও অন্যান্য ফিলিং স্টেশনে হামলার চেষ্টার প্রতিবাদে ২২ টি ফিলিং স্টেশনে সেবা দেয়া বন্ধ করে দেয় ফিলিং স্টেশন মালিকরা। এর ফলে তুমুল জনদূর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
এ সময় গ্যাসের জন্য এম্বুলেন্স ও বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়িকে সিএনজি স্টেশনগুলোতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ায় পর জ্বালানী শেষ হয়ে যাওয়ায় গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। গ্যাসের কারণে গাড়ি না চালাতে পারায় রুগী সহ সাধারণ যাত্রীরা আটকে পড়ে রাস্তায়।
সিএনজি পাম্প মালিক সমিতি জানায়, সোমবার সকালে নরসিংদীর সোনারগাঁও ফিলিং স্টেশনে দাবি আদায়ের নামে ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে রেন্ট এ কারের চালকরা। এসময় তারা মহাসড়কের আরও কয়েকটি ফিলিং স্টেশনে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়।
ঘটনার পরই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কর্মচারীরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী রেখে সোমবার বিকেল ৫ টা থেকে জেলার সিএনজি পাম্প গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিক পক্ষ। ফিলিং স্টেশন গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পরেছে দুরপাল্লার পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহন গুলো।
নরসিংদী সিএনজি ফিলিং স্টেশন পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোমেন মোল্লা বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতা কারণে ফিলিং স্টেশন ও পাম্প বন্ধ রেখেছিলাম। কারণ রেন্ট এ কার মালিক চালকরা আমাদের পাম্পগুলোতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
প্রশাসন দোষীদের আইনের আওতায় আনার ও আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় আমরা জেলার সকল সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পাম্প খোলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি।
তবে সিএনজি স্টেশনে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা অস্বীকার করেছে রেন্ট এ কার চালকরা। নরসিংদী গ্যাস চালিত রেন্ট এ কার আন্দোলনের আহবায়ক আসিফ খান বলেন, আমাদের দাবি ছিলো ফিলিং স্টেশনগুলো কন্টিনারে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদের দাবি মানছেন না। তাদের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা সিএনজি স্টেশনগুলোতে লাইন দিয়ে গ্যাস না পেয়ে আমরা গাড়ি চালাতে পারছি না। এজন্য আমরা সিএনজি স্টেশন গুলোতে গিয়ে মালিক ও ম্যানেজারদের সাথে কথা বলেছি।
এসময় আমরা কোন হামলা ও ভাংচুর করিনি। ওদেরই এক কর্মচারীর মাধ্যমে একটি গ্লাস ভেঙ্গেছে। আমাদের নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ভাংচুর যারা করছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আর তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, মালিক ও চালক সকলের সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করা হবে।
গ্যাস ও তেল ছাড়া কোন পরিবহন চলতে পারবে না। রমজান মাসে জনদূর্ভোগের বিষয়টি বোঝালে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে সিএনজি স্টেশন গুলো চালুর ঘোষণা দেয়।