নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : মোঃ তানসেন আবেদীন
যাবতীয় সংস্কার কাজ শেষ করে আগামী ১৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বিষয়টি বুধবার সময়ের নারায়ণগঞ্জকে নিশ্চিত করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় ভবনে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করার পর ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকে ভবনটিতে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল
এদিকে পাসপোর্ট তৈরি, নবায়ন ও অন্য সেবার জন্য প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার মানুষ সেবা নিতে আসতেন এই কার্যালয়ে। ভবন পুড়ে যাওয়ায় এখানে সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে সেবা অব্যাহত রাখতে নারায়ণগঞ্জকে তিন জোনে ভাগ করে পার্শ্ববর্তী তিন জেলার আঞ্চলিক অফিস থেকে সেবা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জ সদর ও ফতুল্লার বাসিন্দারা কেরানীগঞ্জ, সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারের বাসিন্দারা নরসিংদী এবং বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দাদের মুন্সীগঞ্জ জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সেবা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে অন্য জেলায় গিয়ে সেবাগ্রহণে নানা রকম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। পড়তে হচ্ছে দালাল চক্রের হাতে। ফলে অনেকেই অপেক্ষা করছেন নারায়ণগঞ্জ কার্যালয় চালুর। প্রায়ই দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে খোঁজ নিচ্ছেন কবে নাগাদ খুলবে পাসপোর্ট অফিস।
জানা যায়, চারতলা পাসপোর্ট কার্যালয়ের নিচতলায় বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। দ্বিতীয় তলায় সার্ভার রুম ও উপপরিচালকের কক্ষ রয়েছে। সেখানে সারি সারি সাজিয়ে রাখা ছিল তৈরি পাসপোর্ট। পুরো চারতলা ভবনের কোনোকিছুই আর বাকি নেই। তৈরি করে রাখা পাঁচ হাজারেরও বেশি পাসপোর্টও পুড়ে গেছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আশরাফুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, পাসপোর্ট অফিসের পাশের এলাকায় তাদের বাড়ি। অফিসটি পুড়ে যাওয়ার তার বড় ভাইকে মুন্সীগঞ্জ জেলায় গিয়ে দীর্ঘ সময় লাইন ধরে অপেক্ষা করে কাজ সারতে হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম চালু হলে এই ভোগান্তিতে পড়তে হতো না বলে এই যুবক জানান। এছাড়া দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখন টাকা দিয়ে তাড়াতাড়ি কাজ সারতে হয়েছে।
আব্দুর রহিম নামের এক যুবক। তিনি বলেন, যানজট ঠেলে সেই নংসিংদী গিয়ে পাসপোর্টের কাগজপত্র জমা দিয়েছি। সেখানে দালালকে টাকা না দিলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। ফলে টাকা দিয়ে কাজ করাতে হয়েছে। এখনও পুরো কাজ শেষ হয়নি। নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট অফিস থাকলে এতো ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।