বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

অর্থনীতি

গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত আবারও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে ৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। আগের বছর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার […]

গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ

ছবি: সংগৃহিত

নিউজ ডেস্ক

১২ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৭

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত আবারও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে ৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। আগের বছর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস (অটেক্সা) থেকে পাওয়া হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকরা ৭২০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে রপ্তানিতে কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিলেও ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা ফিরে এসেছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ০.৭৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি ২৫ শতাংশ কমে ৭২৯ কোটি ডলারে নেমেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের আমদানি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন। বিশেষ করে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের ক্রয়াদেশ অন্য দেশে স্থানান্তর করছে, যা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এছাড়া, চীনের বিনিয়োগকারীরা কারখানা অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী হতে পারেন, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ার ফলে বাংলাদেশও অতিরিক্ত ক্রয়াদেশ পাচ্ছে বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা।

অটেক্সার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৬০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম একই সময়ে ১৪৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাড়তি অর্ডারের এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ তার পোশাক শিল্পের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতি

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৬ মে ২০২৫, ১৯:৩২

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা ও পরিসর বাড়াতে চীনের সঙ্গে নতুন একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। ‘মোংলা বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরটি কেবল অবকাঠামোতেই নয়, কৌশলগত বাণিজ্যিক ক্ষমতার ক্ষেত্রেও দক্ষিণাঞ্চলের একটি মূল হাবে পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর সঙ্গে সরকার-থেকে-সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর আগে, ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।

প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ দশমিক ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৪৭৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা, বাকি অর্থ চীন সরকার দেবে ঋণ হিসেবে—যার পরিমাণ ৩ হাজার ৫৯২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় দুটি ৩৬৮ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি, আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল, মাল ডেলিভারি ইয়ার্ড, বহুতল গাড়ি সংরক্ষণাগার, সানকেন রেক অপসারণ ব্যবস্থা এবং মূল সড়ক উন্নয়নসহ শিট পাইলিং নির্মাণ হবে। এর পাশাপাশি নির্মিত হবে প্রায় ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডেড কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কনটেইনার ইয়ার্ড এবং ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার ঝুঁকিপূর্ণ মাল হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড।

প্রকল্পটিতে সংযুক্ত হবে আধুনিক মাল হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয় অপারেশনাল সিস্টেম, যার মধ্যে থাকবে দেশের প্রথম চালকবিহীন (Unmanned) ক্রেন প্রযুক্তি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মোংলা পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় বন্দরে পরিণত হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ও রেল সংযোগ চালুর পর থেকে বন্দরে পণ্য ওঠানামার সময় অনেক কমে এসেছে এবং এতে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে।

প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক জানিয়েছেন, বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. সামিউল হক বলেন, “এটি কেবল অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক কৌশলগত ভরকেন্দ্রকে আরও শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে, যা দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।”

মোংলা পোর্ট বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে মোংলার গুরুত্ব এবং ব্যবহারযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। খুলনা সিভিক সোসাইটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “এই উদ্যোগ অবশ্যই দেশের জন্য শুভ সংবাদ, তবে স্থানীয় মানুষের সম্পৃক্ততা ও স্বার্থ নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।”

১৯৫০ সালে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে পশুর নদীর তীরে গড়ে ওঠা মোংলা বন্দর বর্তমানে পাঁচটি জেটি ও ২২টি নোঙর পয়েন্ট নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙর করতে পারে। সময়ের সঙ্গে এই বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে, আর এই প্রকল্প সেই বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি

এবার ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

নিউজ ডেস্ক

১৮ মে ২০২৫, ০০:১০

ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ একাধিক পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ১৭ মে শনিবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে প্রস্তুত পোশাক, সুতা, প্লাস্টিক, জুস ও কনফেকশনারি পণ্য ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আর প্রবেশ করতে পারবে না। এসব পণ্য শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর বা মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা যাবে।

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও কিছু পণ্যে ছাড় রয়েছে। মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথরের মতো পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে বাধা থাকছে না। পাশাপাশি, ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যে সব বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছরের মার্চে চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশই হচ্ছে একমাত্র সমুদ্র প্রবেশপথ ও অভিভাবক। ওই মন্তব্যের পরপরই ভারত বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এবার স্থলবন্দর রপ্তানিতেও কঠোরতা আরোপ করল দিল্লি।

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

ঢাকার রপ্তানিকারকরা বলছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে পরিবহন খরচ বাড়বে, সময়ও অনেক বেশি লাগবে, ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ করে যারা ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর বাজারে কম দামে পণ্য সরবরাহ করতেন, তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত আর্থিক চাপ বাড়াবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এমন পদক্ষেপ কেবল বাণিজ্য নয়, দুই দেশের কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি জোরালো হচ্ছে। ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র-সীমান্তসঙ্গী হিসেবে দেশের কৌশলগত গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হলেও, রাজনৈতিক বাস্তবতায় তা চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অর্থনীতি

দেশে প্রথমবার পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ, সাশ্রয় ২৩৬ কোটি টাকা

দেশে প্রথমবারের মতো পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মে মাসে। চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ইতিমধ্যে সফলভাবে পরীক্ষামূলক পরিচালনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তত্ত্বাবধানে এবং সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের বাস্তবায়নে এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে ৩,৬৫৩ কোটি ৬৩ লাখ […]

নিউজ ডেস্ক

১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৭

দেশে প্রথমবারের মতো পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মে মাসে। চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ইতিমধ্যে সফলভাবে পরীক্ষামূলক পরিচালনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তত্ত্বাবধানে এবং সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের বাস্তবায়নে এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে ৩,৬৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে।

এই পাইপলাইন ব্যবস্থা চালু হলে দেশের জ্বালানি খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকায় ট্যাঙ্কার ও নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয় যা ব্যয়বহুল এবং অপচয়সাপেক্ষ। পাইপলাইন পদ্ধতিতে এই পরিবহন হবে অধিকতর নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং দক্ষ। প্রাথমিকভাবে এই পাইপলাইনে ডিজেল পরিবহন করা হবে, তবে ভবিষ্যতে অন্যান্য জ্বালানিও এই ব্যবস্থায় পাঠানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

প্রকল্পটির কারিগরি দিকগুলো বেশ উন্নত। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফ্লুর কর্পোরেশন এর নির্মাণে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে। পতেঙ্গা, কুমিল্লা, ফতুল্লা ও গোদনাইলে নির্মিত হয়েছে চারটি প্রধান টার্মিনাল। এই পাইপলাইনে বছরে ২৭ লাখ টন জ্বালানি তেল পরিবহন করা সম্ভব হবে, যা বর্তমান চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করতে সক্ষম। বিপিসির হিসাব অনুযায়ী, এই ব্যবস্থা চালু হলে বছরে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে পরিবহন ব্যয় ও অপচয় কমানোর মাধ্যমে।

বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানান, পাইপলাইন ব্যবস্থায় তেলের অপচয় প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই ব্যবস্থায় ২৪,৫০০ টন তেল উত্তোলনযোগ্য থাকবে, যা জ্বালানি সরবরাহে নিশ্চয়তা দেবে। আগামী মে মাসে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এই প্রকল্প দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই পাইপলাইন নেটওয়ার্ক দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।