নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০০৮ সালে আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক সফরে কক্সবাজার এসেছিলেন জামায়াতের তৎকালীন আমীর মতিউর রহমান নিজামী। সেসময় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট।
এরপর ধীরে ধীরে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে অভিযুক্ত হয়ে ২০১০ সালে গ্রেফতার ও পরবর্তী রায়ে মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি আলী আহছান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ পুরোনো অনেক নেতার ফাঁসি হলে বন্ধ হয়ে যায় জামায়াতের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম। তবে ম্যান টু ম্যান সাংগঠনিক যোগাযোগ সবসময় সচল রাখে দক্ষ নেতৃত্ব।
গত জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম সচল করে জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেশ সংস্কারের উদ্যোগের ফাঁকে সারাদেশে দলীয় ভিত্তি মজবুত করতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা হতে পাথুরিয়া চষে বেড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
তারই সূত্র ধরে প্রায় ১৬ বছর পর কক্সবাজারে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ্যে কর্মী সম্মেলন করছে দলটি।
জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ নূর আহমদ আনোয়ারি বলেন, আমীরে জামায়াতের আগমন উপলক্ষে ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। কর্মী সম্মেলনে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে।
অধ্যক্ষ আনোয়ারী বলেন, বিগত আওয়ামী পিরিয়ডে বেশি নির্যাতন নিষ্পেষণ ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছে জামায়াত ও ছাত্রশিবির। দেশে মানবাধিকার, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার ছিল নির্বাসিত।
আওয়ামী লীগ জুলুমতন্ত্র কায়েম করে দেশের মানুষকে এক প্রকার জিম্মি করে রাখে। আমি ও ডামি মার্কা নির্বাচন করে গুম, খুন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও টাকা পাচার করে দেশকে একটি বিভীষিকাময় ও বিশৃঙ্খল পরিবেশে ঠেলে দেয়। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আশাহত হন জনতা।
জেলা আমীর বলেন, আমীরে জামায়াত দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যের পাশাপাশি কক্সবাজারের লবণ, পর্যটন, চিংড়ি ও স্থানীয় কৃষিজ পণ্য উৎপাদন-উন্নয়ন ও রপ্তানির প্রয়োজনীয়তা জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরবেন। কক্সবাজার থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা হয়, স্থানীয়দের জীবন-মান উন্নয়নে সেই পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয় না।
পর্যটন রাজধানী বলা হলেও এখনো পর্যটন শিল্পকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। কক্সবাজারে উৎপাদিত লবণ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব। কিন্তু অসাধু কিছু ব্যবসায়ী মুনাফার লোভে লবণ শিল্পকে নস্যাৎ করে দিতে সরকারকে বিদেশ থেকে লবণ আমদানির প্রক্রিয়ায় জড়ান। এ ব্যাপারে আমীরে জামায়াতের সহযোগিতা কামনা করবো।