সেন্টমার্টিন দায়িত্বে থাকা টেকনাফ ২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আগুন লাগার খবর শুনে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এতে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানও জরুরি ছিল। পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেছে। তবে আগুন নিভাতে গিয়ে স্থানীয় ৬ জন আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
কিংশুক ইকো রিসোর্টে স্বত্বাধিকারী সরওয়ার আলম বলেন, তিনটি রিসোর্টে প্রাথমিকভাবে ৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা অজিত কুমার দাস বলেন, সেন্টমার্টিনে শায়রী রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে পাশের আরও দুটি রিসোর্ট আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে গলাচিপার বিচ ভ্যালি এবং কিংশুক রিসোর্টের অধিকাংশ পুড়ে গেছে। আমরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছি। এসব রিসোর্টগুলো খুব সুন্দর এবং উন্নতমানের ছিল। রিসোর্ট মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ কোটি টাকায় ক্ষতি হয়েছে।
পুড়ে যাওয়া কিংশুক রিসোর্টের সহকারী পরিচালক সাইফুদ্দিন বাবর বলেন, হঠাৎ করে রাতে আগুন দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে আমরা হোটেলে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে নেই। ততক্ষণে আমাদের রিসোর্টের ১৫টি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কাঠ-বাঁশ এবং ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল আমাদের রিসোর্টটি। তাই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেড় কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের ব্যবসা লোকসানে পড়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, দ্বীপটিতে বিভিন্ন মানের আড়াই শত আবাসিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও যেখানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কি তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। মাত্র কয়েকটি ছাড়াই কোন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। আর আগুন নিয়ন্ত্রণে নেই কোন সরকারি ব্যবস্থাও। ফলে এটিকে এখন গুরুত্ব দেয়া জরুরি।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটির ভঙ্গুর দশা, দুর্ঘটনার শঙ্কা
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আমাদের একটা টিম সেখানে পৌঁছেছে। আগুনের ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। আর ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সহায়তায় করা যায়, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই টি রিসোর্ট সম্পূর্ণ ভস্মিভূত এবং একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যটন মৌসুমের পাশাপাশি পর্যটকদের অবস্থান এবং গুরুত্ব বিবেচনায় ঘটনার তদন্তে টেকনাফের ইউএনও’কে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২ দিনের মধ্যে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন ও সুপারিশমালা প্রণয়নে তদন্ত রিপোর্ট দিতে কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান জেলা প্রশাসক।