সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় চড়া সুদে ঋণ না শোধের অভিযোগে এক দিনমজুরকে নির্যাতনের পর ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে। নিহত ফারুক হোসেন (৩৫) পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কিসামত নগরবন্দ গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
গত শুক্রবার বাড়ি ফেরার পথে দাদন চক্রের হাতে আটক হন তিনি। পরদিন শনিবার সকালে স্থানীয় বাঁশবাগানে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফারুক এরশাদ হোসেন, সুবাস চন্দ্র ও মুকুল চন্দ্রের কাছ থেকে চড়া সুদে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ২০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। অধিকাংশ টাকা শোধ করলেও দাদন চক্র সুদ-আসলে ২ লাখ টাকা দাবি করে। চাপে তিন মাস আগে ঢাকায় পালিয়ে যান ফারুক।
শুক্রবার স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে বাড়ি ফেরার পথে এরশাদ চক্রের লোকজন তাকে আটক করে কালিরপাট এলাকার একটি আস্তানায় নিয়ে মারধর করে। স্ত্রী রাশিদা বেগমের অনুরোধ উপেক্ষা করে পরদিন সকালে তার ঝুলন্ত লাশ ফেলে তারা।
মামলার বাদী মজিবর রহমানের বক্তব্য, “দাদন চক্র টাকার লোভে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।” ফারুকের স্ত্রী রাশিদা অভিযোগ করেন, “স্বামীর ব্যাগ সুবাসের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে। ওরা তাকে মারার পর ফাঁসি লাগিয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দাদন চক্রটি ঋণের ব্যবসা চালায়। মামলায় এরশাদ, সুবাস, মুকুল ও স্বপন কুমারসহ ৬-৭ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। ইতিমধ্যে স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি নুরনবী বলেন, “তদন্তে জাহাঙ্গীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা জানান, দাদন চক্রের ঋণজালে পড়ে গরিব পরিবারগুলোর সর্বনাশ হচ্ছে। ফারুকের পরিবার ন্যায়বিচার দাবি করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠেছে এলাকায়। লাশের সনদ পেতে গড়িমসি ও তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।