ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িত শ্যুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার সহযোগী মোটরবাইক চালক আলমগীর হোসেন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তারা গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে অবস্থান করছে।
সূত্রগুলো জানায়, ভারতে অবস্থানকালে এই দুজনকে সহায়তা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব। তার তত্ত্বাবধানেই তারা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে—এমন দাবি করা হয়েছে। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্রের দাবি অনুযায়ী, হাদির ওপর হামলাটি ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে পরিচালিত। একই ধরনের আরও হামলার পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা রয়েছে বলে আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে আরও কয়েকটি সম্ভাব্য ‘হিট টিম’ সক্রিয় থাকতে পারে—এমন উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে মূল শ্যুটার ফয়সাল করিম মাসুদ তার ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছে, ব্যবহৃত অস্ত্রটি জ্যাম হয়ে যাওয়ায় সে কেবল একটি গুলি করতে সক্ষম হয়। তার পরিকল্পনা ছিল চার রাউন্ড গুলি চালানোর—এমন কথাও সূত্রে উঠে এসেছে।
এছাড়া সূত্রে আরও বলা হয়েছে, ফয়সালের মতো আরেক অস্ত্রধারী ক্যাডার হিসেবে চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সাজ্জাদের নাম আলোচনায় এসেছে। তিনি ২০২৫ সালের ১৩ মে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামের মুরাদপুরে ফয়সাল আহমেদ শান্ত হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে ২৯ জুলাই ২০২৫ সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে তিনি কারামুক্ত হন।
এ অবস্থায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের যেসব অস্ত্রধারী ক্যাডার বিভিন্ন মামলায় জামিনে রয়েছেন, তাদের বর্তমান অবস্থান ও কর্মকাণ্ড দ্রুত যাচাই করার দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।