ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়েখে চরমোনাই) বলেছেন, শুধু নির্বাচন আয়োজন করলেই হবে না, এর আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবশ্যই আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বরিশাল নগরীর গির্জা মহল্লায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা, চরিত্র ও নৈতিকতার ভিত্তিতে ছাত্রসমাজকে গড়ে তুলছে। বর্তমান সময়ে ভোগবাদী সংস্কৃতি ও নৈতিক অবক্ষয় তরুণদের বিপথগামী করছে।
এ অবস্থায় তাদের দায়িত্বশীল, আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র নির্বাচনের আয়োজনের জন্য আন্দোলন হয়নি, বরং সংস্কার নিশ্চিত করতেই গণআন্দোলন হয়েছে। তাই নির্বাচন যদি সঠিকভাবে আয়োজন করতে হয়, তবে অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ ও ইসলামী চেতনা দিয়েই ছাত্রসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করা সম্ভব। ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্ম দেশ ও জাতির কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ মিশকাতুল ইসলাম প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা জাতির প্রাণশক্তি। তাদের সঠিক পথে গড়ে তুলতে না পারলে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তির পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে তরুণদের মাদক, সন্ত্রাস, সাইবার অপরাধ ও অশ্লীল সংস্কৃতি থেকে দূরে রাখতে সামাজিক প্রতিটি স্তরে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরের সভাপতি প্রফেসর মুহাম্মাদ লোকমান হাকীম, সিনিয়র সহসভাপতি সৈয়দ নাছির আহমেদ কাওছার, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল খায়েরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বক্তারা সবাই আগামী নির্বাচনে সংস্কার নিশ্চিত করা এবং জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের স্বার্থে পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি জানান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসলামী আন্দোলনের এই অবস্থান আগামী নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। কারণ পিআর পদ্ধতির দাবি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক শক্তি তুলেছে, যা নির্বাচন কমিশনের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।