শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

রাজনীতি

হাসিনার বেগতিক অবস্থা টের পেয়েই টাকা নিয়ে পালিয়েছেন লোটাস কামাল

সরকার পরিবর্তনের আভাস পেয়েই গত জানুয়ারি থেকে নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব খালি করে বিদেশে পালিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল ও তার পরিবার। গত জানুয়ারি থেকে তারা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে অবশ্য পাওয়া গেছে […]

নিউজ ডেস্ক

০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৩

সরকার পরিবর্তনের আভাস পেয়েই গত জানুয়ারি থেকে নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব খালি করে বিদেশে পালিয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল ও তার পরিবার। গত জানুয়ারি থেকে তারা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে অবশ্য পাওয়া গেছে ৮০ কোটি টাকার বেশি। মূলত ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে পুরো অর্থ তুলে নিতে পারেননি। অভিযোগ আছে, সাবেক এই মন্ত্রী ব্যাংক, পুঁজিবাজার ও সরকারি প্রকল্প থেকে লুটেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। সাম্রাজ্য গড়েছেন দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে।

২০০৮ সাল থেকে টানা ১৬ বছর কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা) আসনের এমপি ছিলেন আবু হেনা মোহাম্মদ (আ হ ম) মুস্তফা কামাল। তিনি পরিচিত লোটাস কামাল নামে। আওয়ামী লীগের হয়ে পাঁচবার সংসদ সদস্য হওয়া এই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ক্রিকেট সংগঠকও। সব পরিচয় ছাপিয়ে লোটাস কামাল একজন বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ।

অথচ তার হাতেই দেশের অর্থনীতি বলা চলে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতন আঁচ করতে পেরে গত ১৫ জুলাই লোটাস কামাল ও নাফিসা কামাল দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এর আগেই তাদের ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন সিংহভাগ অর্থ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ২২ আগস্ট লোটাস কামাল, তার স্ত্রী কাশমিরী কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে বিএফআইইউ।

তথ্য বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১০ সালের পুঁজিবাজার কারসাজি, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট করেছেন কামাল দম্পতি। মেয়ে নাফিসা কামাল বাবার প্রভাব খাটিয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। বিভিন্ন সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকায় কোনো সংস্থাই এসব অনিয়মের বিষয়ে টুঁ শব্দও করতে পারেনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউতে তাদের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ জমা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্তে বেরিয়ে আসছে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ।

ব্যাংক থেকে তুলে নেন ৬৫০ কোটি টাকা:

ব্যাংকে তারল্য সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত বছরের শেষ দিক থেকেই টালমাটাল অবস্থায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। বিশেষ করে নির্বাচনে বিএনপিসহ বড় দলগুলো অংশগ্রহণ না করায় সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ছিল আগে থেকেই। এজন্য লোটাস কামাল, স্ত্রী কাশমিরী কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামাল গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংক থেকে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত হিসাব থেকে তুলে নেওয়া এসব অর্থের বেশিরভাগই পাঠিয়েছেন দেশের বাইরে। গত জানুয়ারি মাসে কামাল পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে স্থায়ী আমানত ছিল ৭৩০ কোটি টাকা। তবে গত ২২ আগস্ট তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ। এ কারণে তিনজনের ব্যক্তিগত হিসাবে থাকা ৮২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেট:

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে জানা যায়, লোটাস কামাল এবং তার পরিবারের সদস্যরা একটি বৃহৎ পাচার চক্রের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই চক্রটি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে সরকার নির্ধারিত অতিরিক্ত ফি হিসেবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা শ্রমিকদের কাছ থেকে ভুয়া চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে।

প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের জুলাইয়ে যখন মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলে, তখন কর্মী পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি নির্বাচনের দায়িত্ব পায় মালয়েশিয়া। তাদের কাছে ১ হাজার ৫২০টি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠিয়েছিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। কিন্তু মাত্র ২৫টি এজেন্সির নাম নির্বাচন করা হয়। এজেন্সি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালা ছিল না। দেখা গেছে, সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল ও তার পরিবার, সাবেক তিন এমপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এবং এ খাতের নতুন অনেক প্রতিষ্ঠান বিপুলসংখ্যক কর্মী পাঠিয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরী কামালের অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ ৭ হাজার ১৫২ জন ও মেয়ে নাফিসা কামালের মালিকানাধীন অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল ২ হাজার ৭০৯ জন শ্রমিক পাঠিয়েছে। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা। সিন্ডিকেটটি নিয়েছে কর্মীপ্রতি ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, অনেক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গিয়ে নানা জটিলতায় কাজ পাননি কিংবা কেউ কেউ ঋণ করে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছেন। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের অনেকেরই মানবেতর ও অমর্যাদাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাপনের বিবরণ উঠে আসে।

শেয়ারবাজার কারসাজি:

২০১০ সালে শেয়ারবাজার কারসাজিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন লোটাস কামাল। লোটাস কামাল তখন বিভিন্নভাবে শেয়ারবাজারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং সস্তায় শেয়ার কেনার পর তা বিদেশে পাচার করেছিল। ওই সময় লোটাস কামাল এবং তার চক্র প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুদক এরই মধ্যে এই তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করেছে। দুদকের উপপরিচালক নুরুল হুদার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম এ ব্যাপারে কাজ করছে।

নির্বাচনী হলফনামায় অসংগতি:

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজের সম্পদের চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ বহু গুণ বেশি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে লোটাস কামালের বিরুদ্ধে। গত ৭ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া এই হলফনামায়, কামালের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, স্ত্রীর সম্পদ দেখানো হয়েছে ৬২ কোটি ২৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা। নিজের স্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ২ কোটি ৩০ লাখ হলেও, স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৪২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বলে হলফনামায় জানানো হয়েছে। কামাল তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং পাঁচ নাতি-নাতনিকে দান করে কিছু সম্পদ কমিয়েছেন। এর মধ্যে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ারের ২ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার টাকার অংশ তিনি তার মেয়ে নাফিসা কামালকে দিয়েছেন, এবং স্ত্রী, মেয়ে ও পাঁচ নাতি-নাতনিকে দিয়েছেন প্রায় ৩১ কোটি টাকার সম্পত্তি।

তবে সূত্র জানায়, কামালের হলফনামায় উল্লিখিত সম্পদের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশে স্বজনের নামে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

৫০০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক:

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) নামে-বেনামে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক লোটাস কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের ব্যাপারে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

দুদকের গোপন অনুসন্ধান অনুযায়ী, ঢাকার নিকুঞ্জে জোয়ারসাহারায় রয়েছে আধুনিক বাণিজ্যিক ভবন ‘লোটাস কামাল টাওয়ার’। বাড্ডা ও উত্তরায় রয়েছে তার বহুতল বাড়ি ও দামি ফ্ল্যাট। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে শেয়ারবাজারে। ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রমাণ মিলেছে সঞ্চয়পত্রে। লোটাস কামাল প্রপার্টিজ ও অরবিটাল এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন লোটাস কামাল। এ ছাড়া, স্ত্রী কাশমিরী কামালের নামে ঢাকার গুলশান, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্লট-ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় তার নিজের ও স্ত্রীর নামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ জমি।

 

স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে নগদ অর্থ। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারেও বিনিয়োগ রয়েছে কাশমিরী কামালের। লোটাস কামাল প্রপার্টিজ ও সৌদি বাংলাদেশ কন্ট্রাকটিং কোম্পানিসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে ২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন কাশমেরী। তার সঞ্চয়পত্র রয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকার। তিনটি দামি গাড়ির মালিক তিনি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লোটাস কামালের প্রায় ৮০ কোটি টাকা থাকার তথ্য পেয়েছে দুদক। আয়কর নথিতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম দেখিয়েছেন তিনি। লোটাস কামাল ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ খুঁজতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, রাজউক, ঢাকা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর, রেজিস্ট্রার অফিস এবং ভূমি অফিসে চিঠি দিয়েছে দুদক।

লুট করতে প্রকল্প অনুমোদন:

পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালে লোটাস কামাল কুমিল্লা জেলা অন্তর্ভুক্তি শর্তে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ২০১৮ সালে, কামালের বাড়ির পাশেই সাড়ে ১০ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় এই আইটি সেন্টার। ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কুমিল্লাসহ সাত জেলায় প্রায় ৫৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলেও, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের কাজ গ্রামীণ এলাকায় কোনো কার্যকর ফল বয়ে আনেনি। একাধিক সূত্রের দাবি, প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং অন্যান্য কাজে কামালের গড়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের কমিশন আদায় হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালে ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লায় নলেজ পার্কের নির্মাণকাজ শুরু হলেও, প্রকল্পটি শুধু জমি অধিগ্রহণের পর সীমানা দেয়াল ছাড়া আর কোনো দৃশ্যমান কাজ হয়নি।

এ ছাড়া, ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত কুমিল্লার সদর দক্ষিণ, নাঙ্গলকোট ও আদর্শ সদর উপজেলায় ৪২টি খাল খননের জন্য ১৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও, কামালের নির্দেশে তার সিন্ডিকেট কাজ না করেই পুরো অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় গত ১৪ অক্টোবর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সদর দক্ষিণ জেলা কৃষক সমবায় ঐক্য পরিষদের সভাপতি মুহম্মদ আখতার হোসাইন। মামলায় কামালের ছোট ভাই গোলাম সারোয়ার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, এপিএস মিজানুর রহমান, জনপ্রতিনিধিসহ ৪৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে লোটাস কামালের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৫৬

রাজনীতি

ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী এবং মেয়ে আটক

এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

নিউজ ডেস্ক

১৩ মে ২০২৫, ১৩:৫৮

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী শেখ শাইরা শারমিনের বিদেশযাত্রায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি থাইল্যান্ডগামী থাই এয়ারওয়েজের টিজি৩২২ ফ্লাইটে ওঠার প্রস্তুতি নিলেও ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ফ্লাইটে উঠতে পারেননি।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে তিনি ফ্লাইটের জন্য চেক-ইন সম্পন্ন করলেও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে তাকে ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি দেয়নি। তবে ইমিগ্রেশন বা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

শেখ শাইরা শারমিনের পারিবারিক পরিচিতি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক বলয়ের সঙ্গে যুক্ত। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীনের কন্যা এবং বাগেরহাট-২ আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের বড় বোন। অন্যদিকে, তার স্বামী আন্দালিব রহমান পার্থ একজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সক্রিয় থেকেছেন।

এই প্রেক্ষাপটে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও বিদেশযাত্রায় বাধার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি নিয়মতান্ত্রিক কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো নির্দেশনা বা রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে?

আইন ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা নিয়ে এ ধরনের ঘটনার পর নানা ধরনের আলোচনা এবং ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি হয়। বিশেষ করে যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরাসরি কোনো মামলার আসামি নন কিংবা তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তখন এমন ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

বর্তমানে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হোক বা রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডপ্রসূত কারণ—ঘটনাটির স্বচ্ছ ব্যাখ্যা প্রয়োজন, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় এবং নাগরিকদের অধিকার বিষয়ে আস্থার পরিবেশ অটুট থাকে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৫৬

রাজনীতি

ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব আ:লীগ নেতাদের দেশে ফিরতে নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

নিউজ ডেস্ক

১৭ মে ২০২৫, ১৭:০৩

গণহত্যা, দমন-পীড়ন ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগপন্থী বহু নেতা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। ভারতের অভ্যন্তরে থাকা অবৈধ বিদেশিদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ জারির পর দেশটিতে পালিয়ে থাকা এসব নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দেশ ছাড়ার হিড়িক।

আগস্ট মাস থেকে এ নির্দেশনা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার কথা থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।

পুশব্যাক ও গ্রেফতারের আশঙ্কায় অনেক নেতা ভারতে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। ইতিমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি নেতা ইউরোপ ও আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন এবং অনেকে নতুন করে এসব দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। তবে পালিয়ে বাঁচা যেন খুব সহজ হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ফিরবেন না, তাদেরকে আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

এ লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বহুমুখী কূটনৈতিক ও আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সরকারের একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আছে। সরকার চায়, এসব অপরাধের দ্রুত বিচার কার্যকর হোক এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মগোপনে গেছেন, আবার কেউ কেউ দেশে ফেরার উপায় খুঁজছেন।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৫৬

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টার সামনে নির্বাচনের সময় নিয়ে বৈঠকে ‘তর্কে’ জড়ালেন সালাহউদ্দিন ও নাহিদ

বিএনপির পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপি ৩১ ডিসেম্বরের এক দিন পরেও জাতীয় নির্বাচন মেনে নেবে না। সংবিধান সংশোধন ছাড়া অন্য সব সংস্কার এক মাসেই সম্ভব।”

নিউজ ডেস্ক

০৩ জুন ২০২৫, ১৮:১৭

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সোমবার (২ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আলোচনার শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমি প্রতিদিন যেসব বৈঠক করি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই আপনাদের সঙ্গে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ করার সময়। এখানেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রচিত হচ্ছে।”

আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল প্রয়োজনীয় সংস্কার নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঠিক করা। তবে আলোচনা ঘুরে দাঁড়ায় নির্বাচন কবে হবে, সেই সময়সূচি নিয়ে বিতর্কে।

বিএনপির পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিএনপি ৩১ ডিসেম্বরের এক দিন পরেও জাতীয় নির্বাচন মেনে নেবে না। সংবিধান সংশোধন ছাড়া অন্য সব সংস্কার এক মাসেই সম্ভব।”

এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ মন্তব্য করেন, “কিছু দল ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়।” এ বক্তব্যে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলে সেটা যদি ভারতের সুর হয়, তাহলে যারা নির্বাচন পেছাতে চায়, তারা কি যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের সুরে কথা বলছে?”

এই বক্তব্যে বৈঠকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং এনসিপি ও বিএনপির প্রতিনিধিদের মধ্যে তীব্র বিতণ্ডা শুরু হয়।

বৈঠক শেষে সালাহউদ্দিন বলেন, “নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।” অন্যদিকে, এনসিপি নেতা নাহিদ বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে সংস্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।”

আলোচনায় অংশ নেওয়া নেতাদের মতে, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার, কিন্তু বাস্তবে বিতর্ক আবর্তিত হয়েছে নির্বাচন সময়সূচিকে ঘিরে।

০২ মে ২০২৫
poll_title
দুইজন ভারতীয়কে বাংলাদেশে ধরে নিয়ে আসার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?

মোট ভোট: ১৪৫৬