অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক পদত্যাগ–গুঞ্জন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে সরব হয়েছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন, ড. ইউনূস একটি
“সস্তা নাটকের মাধ্যমে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে চাইছেন” এবং পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতিকে ‘গণমানুষের আবেগ’ টেস্ট করার মাঠে পরিণত করেছেন।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের আলোচনায় রুমিন বলেন, ড. ইউনূস সরাসরি পদত্যাগের কথা না বললেও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের মাধ্যমে ‘পদত্যাগ বিবেচনায় থাকার’ বার্তা প্রচার করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কৃত্রিম আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার ভাষায়,
“ড. ইউনূস জানেন, সরাসরি কিছু বললে প্রতিক্রিয়া আসবে। তাই একদল ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টার মাধ্যমে তিনি বার্তা পাঠাচ্ছেন। নাটকটি এমনভাবে সাজানো যেন মনে হয়—গণতন্ত্র, পরিবর্তন ও সংস্কার শুধুই তার সাথেই জড়িত।”
রুমিন ফারহানার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো গত নয় মাসে ড. ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ চেয়েও ব্যর্থ হয়েছে, অথচ এনসিপি-র মতো নতুন একটি রাজনৈতিক দল ও তার নেতারা নিয়মিত বৈঠক করার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন,
“নাহিদ ইসলাম, মাহফুজ আলম, আসিফ মাহমুদ ও হাসনাত আবদুল্লাহ—সবাই এক টেবিলে বসে রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশ নিচ্ছেন, অথচ নির্বাচনে পরাজিত কিংবা এখনো নিবন্ধনহীন বিএনপি-জামায়াত নেতাদের কোনো আমন্ত্রণ নেই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন,
“গত নয় মাসে প্রতিটি খাতে ব্যর্থতা—রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন না হওয়া, প্রশাসনিক স্থবিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা—সবকিছুর দায় ইউনূস প্রশাসনের। তিনি জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। বরং নানা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে বঞ্চিত করেছেন, সেনাবাহিনীর অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, এমনকি রাষ্ট্রের শৃঙ্খলাকারী বাহিনীগুলোকে বিতর্কে ঠেলে দিয়েছেন।”
তিনি বলেন,
“এই সরকারের ছাত্রসংগঠন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি সেনাপ্রধানকে নিয়ে যেভাবে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেছে, তা নজিরবিহীন। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনকারী একজন সেনাপ্রধান এই অসম্মান সহ্য করেছেন। এটা তার ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক হলেও, যারা এমন করেছে—তাদের উৎসাহ কোথা থেকে এসেছে, সেটাও ভাবার সময় এসেছে।”
সবশেষে রুমিন বলেন,
“বৃহস্পতিবার রাতে নাটকীয়ভাবে ‘পদত্যাগ বিবেচনায় আছি’ বলা হলো, আর শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে মিছিল—সবই এক পরিকল্পনার অংশ। যেন মনে হয়, কেউ না থাকলে দেশ চলবে না। এটা কেবল একটি চেয়ারকে অনন্য করে দেখানোর চেষ্টা। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনীতিতে চেয়ারের অভাব নেই—জনগণের আস্থার অভাবই আসল সংকট।”
এই বক্তব্য বিএনপির ভেতরের হতাশা, রাজনৈতিক ক্ষোভ এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সংশয়ের প্রকাশ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। একইসাথে, এর মধ্য দিয়ে বিএনপি মূলত প্রধান উপদেষ্টার উপর রাজনৈতিক চাপ বজায় রাখতে চাচ্ছে, যাতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ও ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ দ্রুত স্পষ্ট হয়।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?