আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’-এর সামনে গতকাল রাত থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বানে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
দাবিতে অনড় বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভের ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সরে দাঁড়ায়নি। মধ্যরাতের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে যোগ দেন। এর ফলে যমুনা চত্বর ও আশপাশের এলাকা টানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ রাত ৪টার দিকে সরাসরি যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানান। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং উপস্থিতদের সঙ্গে মিলিত হন। তার নেতৃত্বে আন্দোলনে নতুন গতি আসে।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন,
“ব্যান করো, ব্যান করো—আওয়ামী লীগকে ব্যান করো”, “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে?”, “ওয়ান টু থ্রি ফোর—আওয়ামী লীগ নো মোর!”। কখনও টানা, কখনও ক্ষণিক বিরতি দিয়ে চলতে থাকে এই শ্লোগানধ্বনি।
ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক ঘোষণায় ছাত্রশিবির জানিয়েছিল, তারা যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ীই সিবগাতুল্লাহ সরাসরি বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত হন এবং ছাত্রশক্তির পক্ষে অবস্থান নেন।
সন্ধ্যার পর থেকে মূলত এনসিপি’র উদ্যোগে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি দ্রুতই বহুমাত্রিক রাজনৈতিক প্রতিবাদের রূপ নেয়। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বামধারার কর্মীরাও বিভিন্ন ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে যমুনা চত্বরে জড়ো হতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীদের ভাষ্য,
“এটি আর কেবল একটি সংগঠনের দাবি নয়, এটি গোটা জাতির রক্তের প্রতিশোধের ডাক। যারা গুলি চালিয়েছে, লাশ ফেলেছে, তাদের নিষিদ্ধ না করে কোনো বিকল্প নাই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণের প্রশ্নে গণরোষ এবং নতুন প্রজন্মের তীব্র প্রতিক্রিয়া যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা উপেক্ষা করা সরকারের পক্ষেও সহজ হবে না। অন্তর্বর্তী সরকার এই ইস্যুতে কী অবস্থান নেয়, সেটি এখন দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?