বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি খোজিন রোববার (৪ মে) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানান, রুশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং তা কত দ্রুত সম্ভব—এই বিষয়গুলোতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আমীর খসরু বলেন, “রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছেন নির্বাচন কত দ্রুত হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে রাশিয়া, এমন একটি সরকার দেখতে চায় যেটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের বক্তব্য ছিল, নির্বাচিত সরকার থাকলে নীতিগত ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটি অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলও পর্যবেক্ষণ করছে, কখন একটি গ্রহণযোগ্য ও নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসে।”
বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। খসরু জানান, রাশিয়া চায় প্রকল্পটি দ্রুত শেষ হোক। এটি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের একটি বড় প্রতীক। তবে তিনি স্বীকার করেন, প্রকল্পটি ঘিরে কিছু প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি, কারণ এটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে রাশিয়া যে এ প্রকল্পের সফল সমাপ্তি চায়, সেটি স্পষ্ট করেছে।”
দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। আমীর খসরু বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আলোচনা করেছি, কীভাবে এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর ও কার্যকর করা যায়।”
বিএনপি এবং রুশ দূতাবাসের মধ্যে এই বৈঠককে কূটনৈতিক মহলে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে এবং জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক আগ্রহ বাড়ছে।
বৈঠকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
এই বৈঠক শুধু একটি কূটনৈতিক সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক গতিপথ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?