জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগপন্থীদের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেও বিএনপির আন্দোলন চলবে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন,
“প্রশাসনে বিএনপির লোক নেই। কিন্তু যারা এখনো প্রশাসনে রয়ে গেছে, তারা আওয়ামী দালাল। তাদের কাছ থেকেই এনসিপি সুবিধা নিচ্ছে। এদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
তিনি নাম না-উল্লেখ করে বলেন,
“বর্তমানে কর্মরত কিছু সচিবের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এসব দালাল চক্রই শেখ হাসিনার পতনের পরও তাকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে। এই চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।”
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন,
“আপনার চারপাশে যে আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট রয়েছে, তাদের থেকে সতর্ক থাকুন। তারা আপনাকে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে পারে।”
সাংবাদিকদের কিছু অংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন,
“আমি কথা বললেই কিছু দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ইচ্ছেমতো টুইস্ট করে বক্তব্য প্রচার করেন। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলে।”
নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির এ প্রবীণ নেতা বলেন, “নির্বাচন কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি—আমরা সংস্কার চাই, নির্বাচন চাই। তবে যে সংস্কার দেশের মানুষের প্রয়োজন, সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার। অপ্রয়োজনীয় সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।”
এসময় তিনি অভিযোগ করেন,
“বিদেশে বসে কিছু ব্লগার বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরা দেশ ও জাতির শত্রু। স্বাধীন দেশে প্রত্যেকের মতপ্রকাশের অধিকার আছে। কিন্তু সেই অধিকার ব্যবহার করে মিথ্যাচার করে চরিত্রহনন কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“আপনারা যদি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হন, তাহলে দেশে ফিরে আসুন। দেশ গঠনে ভূমিকা রাখুন। বাইরে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে কোনো লাভ নেই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মির্জা আব্বাসের বক্তব্যে বিএনপির একদিকে এনসিপিকে ঘিরে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক বিভাজনের ইঙ্গিত যেমন রয়েছে, তেমনি প্রশাসনের ভেতরে থাকা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগপন্থীদের প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ স্পষ্ট। একইসাথে ড. ইউনূস সরকারের ভেতরে আস্থার সংকট এবং ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশা’ প্রসঙ্গেও বিএনপির উদ্বেগ আরও ঘনীভূত হলো।
বিএনপির এই বক্তব্য ঘিরে আগামী নির্বাচনী প্রক্রিয়া, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?