বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর পক্ষে নয় এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে অনেক বিষয়েই দ্বিমত পোষণ করেছে। দলটি মনে করে, রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রয়োজনীয় ক্ষমতা থাকা উচিত এবং সেই ক্ষমতা খর্ব করা হলে কার্যকর প্রশাসন ব্যাহত হবে।
বিএনপি স্পষ্ট করেছে যে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের বিষয়ে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিয়োগের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে, এই বিষয়ে সবকিছু সংবিধানে থাকা জরুরি নয়।
দলটি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করার উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি বলেছে, অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত এনসিসির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিলে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হবে।
এছাড়া, বিএনপি এনসিসির মাধ্যমে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাবকেও অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, এই ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। বিএনপি বিলুপ্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহালের পক্ষে।
দলটি মনে করে, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য প্রয়োজনীয় বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে, বিএনপি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপি নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারেও কমিশনের কিছু প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন, কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দলটি।
দলটির মতে, কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার বিষয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। এছাড়া, সংবিধানের মূলনীতি সংক্রান্ত বিষয়েও বিএনপি তার নিজস্ব অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিএনপি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত হলেও উচ্চকক্ষে সদস্য বণ্টনের ক্ষেত্রে তারা ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাদের মতে, উচ্চকক্ষের সদস্য বণ্টনে ভোটের অনুপাতে নয়, আসনের অনুপাতে বণ্টনের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির এই মতামত দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। বিশেষত, ক্ষমতার ভারসাম্য ও নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে দলটির সুস্পষ্ট অবস্থান সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে বিতর্ককে আরও তীব্র করতে পারে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?