বাংলাদেশের রাজনীতি বহুদিন ধরেই উত্তপ্ত, আর ক্ষমতার লড়াইয়ে বিতর্ক, আন্দোলন, ও সহিংসতা নতুন কিছু নয়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতে কিছু গোষ্ঠী বিশ্বাস করে যে, শাসকগোষ্ঠীর অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে এবং তাদেরকে দেশছাড়া করতে হবে।
তাদের যুক্তি হলো—যদি কেউ একটি স্বৈরাচারী শাসককে সরিয়ে দিতে পারে, তবে তারা দেশের দায়িত্বও নিতে সক্ষম।
গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন, আইনের শাসন ও স্বচ্ছ প্রশাসন। যখন একটি সরকার স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠে, তখন জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়, এবং পরিবর্তনের দাবি জোরালো হয়।
তবে শুধুমাত্র একটি সরকারকে উৎখাত করাই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সমাধান নয়। এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী রাজনৈতিক কাঠামো, সুশৃঙ্খল প্রশাসন এবং দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা।
ইতিহাস দেখিয়েছে, একনায়কতন্ত্রের পতনের পর যদি উপযুক্ত নেতৃত্ব না আসে, তবে দেশ আরও বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত হতে পারে। তাই যারা পরিবর্তনের ডাক দেন, তাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তারা দেশ পরিচালনায় সক্ষম।
ক্ষমতা গ্রহণের পরই মূল চ্যালেঞ্জ শুরু হয়—অর্থনীতি সচল রাখা, দুর্নীতি দমন, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
একটি দেশের দায়িত্ব নেওয়া মানে কেবল ক্ষমতায় যাওয়া নয়; বরং জনগণের আস্থা অর্জন করা এবং দেশের উন্নয়নের জন্য সুপরিকল্পিত নীতি বাস্তবায়ন করা।
দায়িত্বশীল সরকার হতে হলে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হয়, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে হয়, এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হয়।
শাসক পরিবর্তন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, তবে তা যদি দায়িত্বশীল ও সুসংগঠিত না হয়, তবে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়তে পারে। যারা পরিবর্তনের ডাক দেন, তাদের নিশ্চিত করতে হবে যে তারা কেবল ক্ষমতা গ্রহণের জন্য নয়, বরং দেশের উন্নয়নের জন্যও প্রস্তুত।
তাই নেতৃত্ব পরিবর্তনের পাশাপাশি, দেশ পরিচালনার দক্ষতাও থাকতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পায়।

‘ছাত্র-জনতা হত্যার সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতি করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত’ আপনি কি সমর্থন করেন?