চব্বিশের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার মতোই একাত্তরের ২৫ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমদ।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে শেখ মুজিব তাজউদ্দিন আহমদকে কোনো নির্দেশনাই দিয়ে যাননি।
ওই রাতে হাসিনার মতোই নেতাকর্মীদের ফেলে রেখে নিজের পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় রেখে তিনি পালিয়ে গেলেন, বলেন শারমিন আহমদ।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিব তখন তাজউদ্দিন আহমদকে শুধু বলেছিলেন, ‘নাকে তেল দিয়ে ঘুমাও, পরশু হরতাল ডেকেছি।’
এখনো খোঁজ করলে সেই হরতালের পোস্টারগুলো পাওয়া যাবে। অথচ তখন আমরা জানতাম, বড় ধরনের ক্র্যাকডাউন আসছে।
শেখ মুজিবও তা জানতেন, কিন্তু তারপরও তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি। এমনকি তিনি একবারও বলেননি, ‘তোমরা সরকার গঠন করো।’ স্বাধীনতার ঘোষণাটুকুও দেননি।
শারমিন আহমদ বলেন, সেই রাতে বাবা শেখ মুজিবের সঙ্গে তর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘মুজিব ভাই, পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও দেখা যায়নি যে, যুদ্ধের মুহূর্তে জাতিকে ফেলে দিয়ে নেতা ধরা দেন।
আপনি কোনো নির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন না।’ কিন্তু শেখ মুজিব তখন শুধু বলেছিলেন, ‘তোমরা যা করার করো।
তিনি বলেন, বাবা তখন জানতে চেয়েছিলেন, কোনো বৈঠকে কি বলে গেছেন, আপনার পরে নেতৃত্বের চেইন অব কমান্ড কী হবে? এর কোনো জবাব তিনি দেননি। ফলে বিশাল বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
ওই রাতে বাবা যখন অস্থির হয়ে এদিক-ওদিক পায়চারি করছিলেন, তখন তরুণ ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এসে বললেন, ‘তাজউদ্দিন ভাই, আমি মুজিব ভাইয়ের ওখানে গিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি আসবেন না। উনি তো গোসল করে পরিপাটি হয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দীর্ঘদিন চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, অনেক সত্য বেরিয়ে আসার ভয়েই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।
তাই তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা বাদ দিয়ে শুধু ৭ মার্চ, ২৬ মার্চের কথাই বলে, তারপর লাফিয়ে চলে যায় ১৯৭২-এ। এটা ভয়াবহ।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জাতীয় চার নেতার পরিবারের সঙ্গে শেখ পরিবারের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে।
তাজউদ্দিন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ একাধিকবার দাবি করেছেন, জাতীয় চার নেতার পরিবারকে শেখ হাসিনা নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?