জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এই লড়াইকে তিনি ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ পর্যন্ত এ লড়াই চলবে।’ তার এই বক্তব্যের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
এই ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ গত রাতে তার ফেসবুকে একটি বিস্ফোরক পোস্ট দেন, যেখানে তিনি দাবি করেন যে, ‘ভারতের পরিকল্পনায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র চলছে।’ তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে উল্লেখ করেন যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামক এক নতুন রাজনৈতিক মডেলের পরিকল্পনা চলছে, যা মূলত ভারতের পক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এই পরিকল্পনায় সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন চৌধুরী, এবং ব্যারিস্টার তাপসকে সামনে রেখে সাজানো হচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তারসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে এবং তাদেরকে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার বিষয়টি সমর্থন করতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই তথ্য ফাঁস করার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে সারজিস আলম তার লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ঘোষণা দেওয়ায় এনসিপি’র মধ্যে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সারজিস আলমের পোস্টে তার অনুসারীরা ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার লড়াইয়ে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপির এই অবস্থান বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজনের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে এনসিপি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আন্দোলন অব্যাহত রাখবে এবং এতে কোন সমঝোতা হবে না।
এদিকে আওয়ামী লীগ এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যায়িত করেছে এবং দাবি করেছে যে, তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এখন দেখার বিষয় হলো, এনসিপি তাদের এই লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় কতটা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ পরিস্থিতির সমাধানে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?