ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের আয়োজিত টক শোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি “অরাজকতার” মধ্যে দিয়ে যাবে।
তিনি এই বিষয়টি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন যে, সামনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তিনি খুব পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি মনে করেন, আগামী দিনগুলোতে একটি নির্বাচন হবে এবং একটি দল ক্ষমতায় আসবে।
এরপর পাঁচ বছর পর আরেকটি নির্বাচন হবে এবং হয়তো কোনো একটি দল ক্ষমতায় আসবে বা আগের দলটি আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসবে। তিনি এটাকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা গত ১৫ বছর ধরে রাজনীতিকে নোংরা করে ফেলেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি রাখেনি। তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, এর আগেও বাংলাদেশের রাজনীতি খুব ভালো ছিল না, কিন্তু গত ১৫ বছরে রাজনীতি একেবারে ঝেটিয়ে বিদায় করা হয়েছে।
এর পরিবর্তে ব্যবসায়ীরা, প্রশাসন, সিভিল ও মিলিটারি ব্যুরোক্রেসি রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছে। তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো সাহস করে কেউ বলবে না, কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যখন এতগুলো স্টেকহোল্ডার রাজনীতিতে জড়িত থাকে, তখন রাজনীতিবিদদের ভূমিকা অনেক ছোট হয়ে যায়।
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, যদি আমরা মনে করি যে, পাঁচ বছর পর পর সুবর্ণ দিন আসবে এবং বাংলাদেশ দারুণ নির্বাচন প্রসব করবে, তাহলে আমরা ভুল করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আট কোটি ভোটার যদি মনে করে যে তারা লাফিয়ে লাফিয়ে গিয়ে ভোট দিতে পারবে, তাহলে তা হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর, এমনকি ২০ বছরও একটি অরাজকতার মধ্যে দিয়ে যাবে। তিনি এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন যে, রাজনীতিবিদরা এই শক্তিগুলোকে পরাস্ত করতে পারবে না। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা পরাস্ত করার ইচ্ছা রাখলেও তা সম্ভব হবে না, কারণ এতে আবারও ফ্যাসিবাদ বা সৈরশাসন কায়েম হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরোধী দলের অবস্থা খুবই নাজুক হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে সরকারি দল এবং বিরোধী দল উভয়েরই সুস্থ ধারায় ফিরে আসা প্রয়োজন।
তবে তিনি মনে করেন, এই প্রক্রিয়া অনেক সময়সাপেক্ষ হবে। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে এখন ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে বিভাজন আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিচার, সংসার এবং নির্বাচন—এই তিনটি বিষয়ে বিভাজন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত না হলে বাংলাদেশ অরাজকতার মধ্যে পড়বে। তিনি শেষে বলেন, যদি ঐক্যমত না হয়, তাহলে নির্বাচন হলেও বাংলাদেশ অরাজকতার মধ্যে পড়বে।

‘ছাত্র-জনতা হত্যার সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতি করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত’ আপনি কি সমর্থন করেন?