ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে আবারও দখলদারদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর এবার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু কাউছার আহামেদ এবং কয়েকজন অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাজারের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করা হচ্ছে এবং সেগুলো মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, “দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি অবৈধ দখল বা চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত থাকে, সে দায় দল নেবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কিন্তু তার এ ঘোষণার পরও নবীনগরে যুবদল নেতা আবু কাউছার আহামেদ তার দখলদার কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঙ্গরা বাজারের জেলা পরিষদের একমাত্র যাত্রী ছাউনির জায়গা দখল করে সেখানে তিনটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দোকানগুলোকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাড়ায় দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি একটি অডিও কল ফাঁস হয়েছে, যেখানে চাঁদাবাজির জন্য সোহান নামে এক এনজিও কর্মীকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে শোনা যায়। জানা গেছে, সোহান আগে একটি এনজিও সমিতিতে কাজ করত, যার মালিক ছিলেন যুবদল নেতা আবু কাউছার আহামেদ। হিসাবনিকাশের গরমিলের অভিযোগ তুলে প্রায় আট বছর আগে সোহানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার মামলা দায়ের করেন কাউছার। সেই মামলা এখনও আদালতে চলমান।
অডিও কল ফাঁস হওয়ার পর কাউছার আহামেদকে বলতে শোনা যায়, “আমি নিজেই আদালত। ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ছিল, তাই কিছু বলিনি। এখন বিএনপি ক্ষমতায়, আমি যা বলব তাই হবে!”
এ বিষয়ে যুবদল নেতা আবু কাউছার আহামেদ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “আমার ভাই দোকানগুলো লিজ নিয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যাত্রী ছাউনি আমি একশত বছরের লিজ নিয়েছি। আমার কাছে একশ বছরের লিজের কাগজ আছে।” তবে তিনি সেই লিজের কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
অপরদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, “দখলের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর সম্প্রতি উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু আবারও অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি জেলা পরিষদের যাত্রী ছাউনির মধ্যেও অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সওজের জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিতে চাইলে আমরা সহযোগিতা করব। সব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘোষণা সত্ত্বেও কীভাবে স্থানীয় যুবদল নেতা এমন দখলদারিতে লিপ্ত থাকতে পারেন? এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

‘ছাত্র-জনতা হত্যার সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতি করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত’ আপনি কি সমর্থন করেন?