জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গঠিত হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় থাকা দলটি কবে আসছে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা না এলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গিয়েছিল
২৪ ফেব্রুয়ারি ধরেই এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে সব পরিকল্পনা। নতুন এই দলের আহ্বায়ক কে হচ্ছেন, তা চূড়ান্ত হলেও গোল বেঁধেছে সদস্য সচিব পদ নিয়ে। এই পদে কাকে নেওয়া হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করতে না পারায় ২৪ ফেব্রুয়ারি
নতুন দলের আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির নেতারা কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ দুই থেকে তিন দিন পিছিয়ে যেতে পারে।
নাগরিক কমিটি সূত্রে জানা যায়, নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে গতকাল বুধবার রাতেও বৈঠকে বসেন নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সেখানে আসন্ন দলকে নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা হয়, বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে দলের সদস্য সচিব পদ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তারা।
দুই সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা নাহিদ ইসলাম নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন, তা চূড়ান্ত। তবে সদস্য সচিব কে হচ্ছেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ পদে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন তিনজন—
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে আলোচনা থাকলেও তারা আহ্বায়ক কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বিভিন্ন আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকা নাগরিক কমিটির সদস্যরা আখতারকে সমর্থন দিচ্ছেন, তবে নাগরিক কমিটির নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী উপদেষ্টা
মাহফুজ আলম চান নাসীরউদ্দীনকে নতুন দলের সদস্য সচিব করতে। অন্যদিকে সাবেক শিবির কর্মীরা শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে নতুন দলের সদস্য সচিব পদে আনার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন জাতীয় নাগরিক
কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এটি চূড়ান্ত হতে পারে বলে নাগরিক কমিটির একটি সূত্র জানিয়েছে। এরপরই দলের আত্মপ্রকাশের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব কালবেলাকে বলেন, শীর্ষ পদে নাহিদ ইসলামকেই সবার পছন্দ। দ্বিতীয় শীর্ষ পদের জন্য আলোচনায় আছেন তিনজন। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগিরই এটি চূড়ান্ত হতে পারে।
২৩-২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দল ঘোষণা করা হবে। নতুন দলের ঘোষণার স্থান হিসেবে শহীদ মিনারকেই বেছে নিয়েছেন নাগরিক কমিটির নেতারা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে একদফা ঘোষণা হয়েছিল এই শহীদ মিনার থেকেই। এরপর রাষ্ট্র বিনির্মাণে পাঁচ দফাও ঘোষণা করা হয় এই স্থান থেকে।
ফলে নতুন দল আত্মপ্রকাশের জন্য এই স্থানকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। যদিও বিকল্প হিসেবে জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, শাহবাগ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আলোচনায় রয়েছে।
নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন আমরা দল ঘোষণার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জনগণ তাদের মতামত জানাচ্ছে, আমাদের সমর্থন দিচ্ছে। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের যে কোনো দিন আমরা দল ঘোষণা করতে পারব। আমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব আছে বলে আমরা মনে করি না।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দল এই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আসছে। নাহিদ ইসলামকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি দলের দায়িত্ব নিতে। আমাদের নিজেদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে, তবে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। মত যেখান থেকেই আসুক না কেন সিদ্ধান্ত সবার সমন্বয়ে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?