সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, “আমরা ক্ষমতাকে না, জনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি,” যা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
সারজিস আলমের মতে, দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, “বছরের পর বছর ধরে খুনি হাসিনার মাধ্যমে নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছে এ দেশের মানুষ।
তার ক্ষমতার পিপাসার কাছে জিম্মি ছিল মানুষ, গোপালগঞ্জের কাছেও জিম্মি হয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ।” এমন পরিস্থিতিতে জনগণের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি ও তার সংগঠন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়ে সারজিস আলম বলেন, “দলে নেতৃত্ব নির্বাচনে গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনোভাবেই চাই না, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটুক।” এতে বোঝা যায়, তিনি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে।
সারজিস আলম প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, “আমরা প্রশাসক দিয়ে দেশ চলতে দেখতে চাই না। আমলারা আমলাতন্ত্রে তাদের যতটুকু টেরিটরি তারা সেখানে কাজ করবে। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সাথে তাদের যতটুকু পরিধি সেখানে কাজ করবে।”
তিনি মনে করেন, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সঠিক সমন্বয় না থাকলে রাষ্ট্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে সারজিস আলম বলেন, “পুলিশ চাইলে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাওয়া সম্ভব। তাদের প্রভাবটা মাঠ পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনো আপনাদের প্রতি আস্থা হারাইনি, আমরা আস্থাটা রাখতে চাই।
কিন্তু আস্থাটা রাখতে পারব কি না সেটা আপনাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।” এতে বোঝা যায়, তিনি পুলিশের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সারজিস আলম স্মরণ করিয়ে দেন, “দুই হাজার মানুষ পরিবারের কথা চিন্তা না করে, মা-বাবার কথা চিন্তা না করে, সহধর্মিণীর কথা চিন্তা না করে, সন্তানের কথা চিন্তা না করে জীবন দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি। অর্ধ লাখ মানুষ রক্ত দেয়নি।” এতে তিনি বোঝাতে চান, শহীদদের ত্যাগ শুধু একটি নির্বাচনের জন্য ছিল না; বরং একটি ন্যায়সঙ্গত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য।
ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে সারজিস আলম বলেন, “আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা প্রশাসক দিয়ে দেশ চলতে দেখতে চাই না।” তিনি আরও বলেন, “
জনপ্রতিনিধিরা যেভাবে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত, তাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্দশা যেভাবে বুঝে, তাদের সাথে যেভাবে মিশে সেটা কোনো আমলা কেন, যারা ওই বিভিন্ন অফিসে বসে থাকে- যতবড় অফিসারই হোক না কেন তাদের পক্ষে বুঝা সম্ভব না।”
এতে তিনি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সঠিক সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?