বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, গণহত্যায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাদের বিচার ও দলটি নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়ব না।
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যায় শহীদ পরিবারের স্বজনরা প্রিয়জনের লাশ পর্যন্ত খুঁজে পাচ্ছে না। আরেকটি গোষ্ঠী ও দল রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা শুরু করেছে।
নেতাকর্মীদের বিচার ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়বেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এদিন গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ হাসানের বাবা বলেন, আমার ছেলে গত ৫ আগস্ট বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। আমি সারাদিন খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান পাইনি। পরদিন থেকে আমি ঢাকা মেডিকেলের মর্গ থেকে শুরু করে ঢাকার প্রতিটি মর্গ, হাসপাতাল এবং কবরস্থানে খোঁজ নিয়েছি।
কিন্তু আমি আমার ছেলের সন্ধান পাইনি। এরপর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে হাসান ইনাম ভাই এবং নাফিসা সাকাফি আপু আমার ছেলের লাশ শনাক্ত করে। পরে আমরা ডিএনএ টেস্ট দিয়ে ১ মাস ১ দিন পরে আজ ছেলের লাশ বুঝে পাই।
৫ আগস্ট যারা আমার ছেলেসহ হাজারো মানুষকে হত্যা করেছে তাদের কঠিন থেকে কঠিনতর বিচার চাই। একজন একজন করে ধরে সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদের ধারা বজায় রাখতে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে গণহত্যা করেছে। তাই এ মাটিতে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে, আওয়ামী লীগের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
তারা বলেন, জুলাইয়ের একজন সৈনিকও বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের কবর রচনা করতে হবে। শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না, যারা বিভিন্নভাবে তাদের পক্ষ নিয়েছে প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি তা না করে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা বিপ্লবকে সম্পন্ন করতে দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেবে।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতাকে রুখতে পুলিশ, বিজিবি ব্যাপক গুলি চালায়। এসময় অনেকের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ ছিলেন হাসান। দীর্ঘ ছয় মাস পর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তার লাশের সন্ধান মেলে। পরে ফরেনসিক টেস্ট শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

‘ছাত্র-জনতা হত্যার সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে রাজনীতি করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত’ আপনি কি সমর্থন করেন?