বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কারের নামে দেশের জনগণকে কষ্ট দিয়ে অন্য কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বর্তমানে ফ্যাসিবাদের বিচারসহ সংস্কারের নামে যেসব দাবি উঠছে, তার আগে যা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার।”
বুধবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের ইসলামিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিএনপি নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, “বর্তমানে সংস্কারের নামে যে দাবি তোলা হচ্ছে, সেগুলোর অনেক কিছুই বহু আগেই বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০-এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল। একইসঙ্গে, দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্যেও এসব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। তাই যদি জনগণের দুঃখ-দুর্দশাকে উপেক্ষা করে সংস্কারের নামে কোনো ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়, তবে দেশের মানুষ তা কিছুতেই মেনে নেবে না।”
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, “১৯৭৫ সালের পর যখন জাতি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিল, তখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নেতৃত্ব নিয়ে দেশকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি বাকশাল বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করেন।” তবে তিনি অভিযোগ করেন, “তখনই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে তাঁকে হত্যা করা হয়, যাতে দেশকে আবারও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা যায়।”
বিএনপির জনসভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রোমানা মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) ও জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদার, এম আকবর আলী, কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা, সিমকী ইমাম খান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান লেবু, মকবুল হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান দুলাল, নাজমুল হাসান, তালুকদার রানা, ভিপি অমর কৃষ্ণ দাস, যুগ্ম সম্পাদক শামীম খান, রাশেদুল হাসান রঞ্জন, মুন্সী জাহেদ আলম, নূর কায়েম সবুজ, সদর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিক সরকার এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম।
সমাবেশে বক্তারা সরকারের নীতির সমালোচনা করে বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য বিএনপি সবসময় জনগণের পাশে থাকবে। তারা আরও দাবি করেন, জনগণকে উপেক্ষা করে কোনো ধরনের সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?