নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য সফল করা সম্ভব হবে না’। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রশ্নে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মান্না বলেন, আমি দুটি অভ্যুত্থানের উদাহরণ দেব। বিশাল অভ্যুত্থান হয়েছে মিসরে কিন্তু দলগুলো দলাদলি করতে গিয়ে সেখানে গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির সম্ভাবনা চলে গেছে। আর তার পাশে আছে তিউনেশিয়া, সেটা আরও দরিদ্র দেশ ছিল। কিন্তু তারপরও সেই দেশে যত মারামারি-কাটাকাটি-দলাদলি থাক না কেন সবাই উপলব্ধি করেছে যে, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ না করি তাহলে দেশ গড়ে উঠবে না। তারা সেই একত্রিত হওয়ার জন্যে ঐক্য গড়ে তুলবার জন্য সংগ্রাম করেছে। তিউনিশিয়া সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আজকের বাংলাদেশও সামনের দিকে এগোবে, আমরাও আমাদের যে লক্ষ্য আছে সে লক্ষ্যে সবাই পৌঁছাতে পারব; যদি আমরা সবাই ঐক্যদ্ধ থাকি দেশ ও জাতির স্বার্থে।
মান্না বলেন, প্রত্যেকে বিশ্বাস করে এ দেশ বদলে দেওয়া সম্ভব এবং দেশ গড়া এখন থেকে চলবে। হতে পারে মাঝে মাঝে আপনারা দেখবেন বৈষম্য, মাঝে মাঝে আপনারা দেখবেন বৈরিতা, মাঝে মধ্যে দেখবেন দলে দলে বিভক্তি। তারপরও শেষ বিচারে আমরা একটা জায়গায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। সেটা হচ্ছে দেশের স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ, সেটা অর্থনৈতিক স্বার্থে হোক, গণতন্ত্রের জন্য হোক, স্বাধীনতার প্রশ্নে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন দেশ চাই যেখানে সরকার জনগণের দুঃখে পাশে দাঁড়াবে। সে রকম দেশ গড়বার জন্যে আমরা বলছি, একবারে হবে তা নয় কিন্তু। ধারাবাহিকভাবে লড়াই করতে হবে দেশটা বদলে দেওয়ার জন্যে। বাংলাদেশ সারা পৃথিবীর মধ্যে সেরকম একটা দেশে পরিণত হবে- যে দেশের কথা অন্যান্য জায়গা বলবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন কেরালার কথা বলি যদিও এটি দেশ নয়, একটা রাজ্য। কিন্তু ভুটান একটা দেশ তার কথা বলি। ভুটানে মিনিস্ট্রি অব হেপিনেজ আছে- সুখের মন্ত্রণালয়। তারা জনগণের সুখ কীভাবে সৃষ্টি হয় বা সৃষ্টি করা যায় সে কাজ করে। আমরাও বাংলাদেশকে ওরকম একটা শান্তির, সুখের, প্রশান্তির দেশ গড়তে চাই।
আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আহতদের সুচিকিৎসা এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান মান্না।
এর আগে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের উদ্যোগে আহতের সুচিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় পুনর্বাসনের দাবিতে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি হয়। তিন ঘণ্টা অনশনের পর প্রধান অতিথি মাহমুদুর রহমান মান্না আহতদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।
আহ্বায়ক রেজাউল কবির রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আরিফা সুলতানা রুমা, মুক্তিযোদ্ধা দলের মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?