আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিদায় এবং সরকারের পট পরিবর্তনের পর বিগত আমলে নিয়োগ পাওয়া অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীই নিরুদ্দেশ হয়েছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও একইভাবে নিরুদ্দেশ আছেন কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রেজিস্ট্রার দফতরের সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদ।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আগে সর্বশেষ গত বছরের ১৬ জুলাই তিনি অফিস করেছিলেন। এরপর ছয় মাসের বেশি পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আর দেখা যায়নি তাকে। এ অবস্থায় অনুমতি ছাড়া চাকরিতে অনুপস্থিত থাকা কিংবা চাকরি থেকে পলায়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক চাকরি থেকে অপসারিত হওয়ার কথা তার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তাকে চাকরি দেয় তৎকালীন আওয়ামীপন্থী উপাচার্য আবদুল মঈন।
সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-তে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী পলায়নের দায়ে দোষী হলে তাকে তিরস্কার থেকে শুরু করে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, চাকুরী হইতে অপসারণ কিংবা বরখাস্ত করা হতে পারে।
একই বিধিমালার ২(চ) তে বলা হয়েছে, বিনা অনুমতিতে ৬০ দিন বা তদুর্ধ্ব সময় কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকলে ওই কর্মচারী পলায়ন বলে গণ্য হবেন। সরকারের পট পরিবর্তনের আগে মাজেদ সর্বশেষ ১৬ জুলাই অফিস করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। এরপর থেকে ছয় মাসেরও অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি তিনি। এমনকি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও ধরনের যোগাযোগও নেই তার।
জনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। রেজাউল ইসলাম মাজেদ এখন কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সবশেষ গত ১৩ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা গেছে তাকে। তবে পুলিশি তৎপরতায় সেসময় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি বলেই নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
২০২৩ এর অক্টোবরে মাজেদ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২৩ সালের ১৫ মে সেকশন অফিসারের বিপরীতে রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ আরও কয়েকজনের মৌখিক পরীক্ষা নেয় নিয়োগ বোর্ড। সভায় একক কোনো প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় তিনজন প্রার্থীকে নিয়ে প্যানেল তৈরি করে বিষয়টি সিন্ডিকেটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়।
তবে ৪ অক্টোবর নিয়োগ বোর্ডের সভা বিবরণীতে স্বাক্ষরের জন্য বোর্ড সদস্য তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবিরকে পাঠালে তিনি শুধু একজনের সুপারিশ দেখতে পেয়ে সেখানে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর বিষয়টি সিন্ডিকেটে নেওয়া হলে সেখানেও তিনি আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) জানান। এতকিছুর পরও তাকেই নিয়োগ দেন তৎকালীন আওয়ামীপন্থী উপাচার্য আবদুল মঈন।

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। আপনি কী মনে করেন?