বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, নির্বাচনের কথা এই কারণে আমরা বলছি যে ১৪, ১৮, ২৪ সালে নির্বাচনে যা হয়েছে মানুষের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে চায়। আর একটা নির্বাচিত সরকার যা করতে পারবেন একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা করতে পারবে না। সুতরাং নির্বাচিত সরকার যত দ্রুত আসবে দেশের মঙ্গল তত দ্রুত হবে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ঘোষণাই মহান মুক্তিযুদ্ধের তুর্যধ্বনি শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলাল বলেন, ঝড়ের মধ্যে একটি জাহাজ পড়লে একজন দক্ষ নাবিক পারে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে তেমনি বাংলাদেশের এই অবস্থায় একজন দক্ষ নাবিক প্রয়োজন।
সেই দক্ষ ভান্ডারটা বিএনপির মধ্যে আছে। বিএনপির দেশ পরিচালনার দক্ষতা রয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথম বিভিন্ন নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকার শুধু দিয়েই গেছে। শেখ হাসিনার সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল ভারতকে আমি যা দিয়েছি তারা সারা জীবন মনে রাখবে। ভারত কেন? চায়না হোক আমেরিকা হোক ভারত হোক পাকিস্তান হোক আর বিশ্বের যে কোনো দেশেই হোক সবার সাথে বন্ধুত্ব হবে সমান্তরাল ভিত্তিতে। আমার দেশের মর্যাদা আর তার দেশের মর্যাদা দুটো যখন সমান্তরাল হবে তখনই তাদের সাথে বন্ধুত্ব হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ছোট বন্ধুরা, আমাদের সন্তান সমতুল্য যারা তাদেরকে বলছি আপনারা পাকা ফল ঝাঁকি দিয়ে পেড়েছেন। ১৫-১৬ বছর আমরা ত্যাগের মধ্য দিয়ে বিশেষ করে জিয়া পরিবার, খালেদা জিয়া যে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে একাগ্র চিত্রে এই ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের জন্যে মানসিকভাবে কঠোর ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় একটা পর্যায়ে এসে আপনারা গাছে ঝাঁকি দিয়েছেন আর পাকা ফল পড়েছে। আমি নিশ্চিত এই ফল পড়তো হয়তো আর কিছুদিন সময় লাগতো। তার মানে এই নয় আপনারা সব কৃতিত্ব নেবেন এই আন্দোলনে আরও যাদের ভূমিকা রয়েছে তাদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন। এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা কেন সরকারে গেলেন? আন্দোলনে থাকলে আন্দোলনের মাধ্যমেই তো দাবি আদায় করা যায়। সরকারে যেহেতু গিয়েছে তখন মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে আপনারা সারাদেশে যে কম্বল বিতরণ করছেন এর টাকা দিচ্ছে কে? আপনারা রাজনৈতিক দল করার জন্য বৈঠক করছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, নির্বাচনের কথা এই কারণে আমরা বলছি যে ১৪, ১৮, ২৪ সালে নির্বাচনে যা হয়েছে মানুষের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে চায়। আর একটা নির্বাচন সরকার যা করতে পারবেন একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা করতে পারবে না। সুতরাং নির্বাচিত সরকার যত দ্রুত আসবে দেশের মঙ্গল তত দ্রুত হবে।
তিনি বলেন, ভারতকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করার জন্যও আসাদুজ্জামান কামাল বলেছে। সে নাকি মুক্তিযোদ্ধা। সে মুক্তিযোদ্ধা নয় সে হচ্ছে চুক্তিযোদ্ধা। সেই সময় চুক্তি করে হয়তো মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট নিয়েছে। তা না হলে অন্য দেশে বসে এত বড় কথা কেউ বলতে পারে? যেখানে বাংলাদেশ রক্ষার জন্য এখনো মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত সেখানে এ ধরনের কথা সে বলতে পারে? এ ধরনের কথা বলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তার নামে মামলা হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাৎ সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদের আহমেদ খানের সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফজলুর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সময় কোনো বিষয় নয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনই আসল কথা। তাঁর এই বক্তব্যে আপনার সমর্থন আছে কি?