গত আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হসিনার সরকারের পতনের প্রায় পাঁচ মাস পর ভারতে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এ সময় দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সিনিয়র নেতারা মনে করেন, আমাদের সবার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া উচিত।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে গতকাল শুক্রবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক ছাড়াও নাহিম রাজ্জাক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, পঙ্কজ দেবনাথ, সাইফুজ্জামান শিখর, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মাহবুবুল আলম হানিফের সঙ্গে কথা বলা হয়। তারা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে আবারও মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আমলে শাসনপ্রক্রিয়া ও রাজনীতিতে ভুল করার কথা স্বীকার করেছেন এসব নেতারা। নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তারা বলেন, দল এখন ‘ছিন্নভিন্ন ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে’ রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, তৃণমূল কর্মীদের মনোবল শক্ত আছে বলে দাবি করেন জ্যেষ্ঠ নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘বিদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত গঠনে সাহায্য করার জন্য আমরা ভারতের দিকে তাকিয়ে আছি।’
দলটির আরেক নেতা নাহিম রাজ্জাক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আলোচনায় বসতে এবং নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত, কিন্তু এর জন্য কোনো পরিবেশ নেই। এখনই আমাদের পক্ষে মাঠে থাকা বা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
দলকে উজ্জীবিত করতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ‘জোরালো আলোচনা’ চলছে বলে জানান নাহিম রাজ্জাক। তিনি বলেন, ৩০-৪০ জন সাবেক মন্ত্রী ও এমপি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে যুক্ত আছেন। এই গ্রুপের একজন বাহাউদ্দিন নাছিম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, আত্মগোপনে থেকেও তিনি বাংলাদেশের প্রায় সব জেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন নেতাকর্মীদের থেকে ২০০-৩০০টি কল পাই। এভাবেই আওয়ামী লীগের নেতারা কর্মীদের সঙ্গে এবং কর্মীরা জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।’
বেশ কয়েকজন নেতা দাবি করেন, শেখ হাসিনা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের নেতাদের সঙ্গে ‘নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট’ এর প্রতিক্রিয়া
পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট’। তারা বলেছে, সংঘবদ্ধ অপপ্রচারের অংশ হিসেবে, পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের কথার ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। পত্রিকাটি যাদের বক্তব্য প্রকাশ করেছে তারা সবাই সন্দেহভাজন অপরাধী ও গণহত্যায় অভিযুক্ত। সাংবাদিকতার মৌলিক নিয়ম অনুসরণ না করে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যে পরিপূর্ণ।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছরের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনিও মনে করেন?