দেশের মানুষের আকাঙ্খার বাস্তবায়নে ড.ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারে মনোনিবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী উপ-সচিবদের পদোন্নতি দিয়ে পরিক্ষা এবং প্রশাসন ক্যাডারদের কোটা ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সুপারিশ জানান।
এরপরেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে আওয়ামী লীগের সুবিধা নেওয়া এসব আমলারা। স্বৈরাশাসকের দোসররা গিরগিটির মত রং বদলিয়ে সুশীল সেজে দেশকে অস্থির করার জন্য মিশনে নামে।বহিষ্কারের দাবির পাশাপাশি শৃঙ্খলা না মেনে দিতে থাকেন নানা ধরনের হুমকি-ধমকি।
প্রশাসন ক্যাডারের কতিপয় কর্মকর্তা নিয়ম ভেঙে গত রবিবার সচিবালয়ে শোডাউন করেন। মাঠে নামেন অন্য ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারাও। তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ গত মঙ্গলবার কলম বিরতির নামে একঘন্টা কাজ থেকে বিরত থাকেন।
এছাড়াও রীতিমতো ব্যানার টেনে সভা করেন প্রশাসন ক্যাডারের বর্তমান ও সাবেক প্রায় দেড় হাজার কর্মকর্তা। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে সরকারের প্রতি এমন অবস্থান চাকরি বিধি ও শিষ্টাচারের লঙ্ঘন বলেছেন বিশ্লেষকরা।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার ৩০-এ ধারায় বলা হয়েছে সরকার বা কতৃপক্ষের কোনো আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনোরুপ ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ বা কোনো আন্দোলনে কোনো সরকারি কর্মচারী অংশগ্রহণ করবেন না।
বিধিমালার ৩০-সি ধারায় বলা হয়েছে সরকার বা কতৃপক্ষের কোনো আদেশ বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন,রুপান্তর ও সংশোধন, বাতিলের জন্য প্রভাব বা চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন না কর্মচারীরা।
২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালার ২-ই ধারায় এমন আচরণকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং কেউ তা করলে তিরস্কার ও বরখাস্তের মত শাস্তির উল্লেখ আছে।
তবে কি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রতিচ্ছবি হয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রায়তারা করছেন আমলারা! এমন প্রশ্নই করছেন অনেকে। অনেকে মনে করছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হটাতে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে আমলারা।
এই দলবাজ কর্মকর্তাদের সংখ্যা গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী কমপক্ষে ৭লাখ। এরা হাসিনার ১৫ বছরের টানা শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া। এছাড়া পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাসহ এই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়াবে। এরা প্রশাসনে জগতদল পাথরের মত চেপে বসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রশাসনের সংস্কার যত বিলম্বিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য তা ততই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে